ব্যুরো নিউজ,২৪ এপ্রিল: কাশ্মীরের পহেলগামে মঙ্গলবারের ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। এক নিসর্গময় পর্যটন কেন্দ্রে ২৬ জন নিরীহ প্রাণের এই হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ ভারত। মৃতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং ১ জন নেপালি নাগরিক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের বাইরে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই আবহেই এক রহস্যময় ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে—যেখানে দেখা যায় এক ব্যক্তি কেকের বাক্স হাতে ঢুকছেন পাক দূতাবাসে। তার মুখে কোনও কথা নেই, শুধু সাংবাদিকদের এড়িয়ে ঢুকে পড়েছেন ভিতরে। ভিডিওটির শিরোনাম ছিল—”আজ পাক হাইকমিশনে কেক পৌঁছচ্ছে!” ব্যস, শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা ও বিতর্ক।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
“কেক” না কি অন্য বার্তা? উঠছে প্রশ্ন
এই ‘কেক কাণ্ড’কে কেন্দ্র করে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকে এটিকে পরিকল্পিত বার্তা বা ছদ্ম ছক বলেই মনে করছেন। কেউ আবার বলছেন, এটা হতে পারে কারও জন্মদিনের অনুষ্ঠান বা নিছক কাকতাল। কিন্তু ঘটনাটির সময় এবং পটভূমি এতটাই সংবেদনশীল যে সন্দেহ অমূলক বলা যাচ্ছে না। যদিও কেউ কেউ বলছেন, “হাইকমিশন শত্রু নয়। আবেগে ভেসে সব কিছু না বিচার করাই ভাল।” তবে একাংশের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে পাকিস্তান যেন কূটনৈতিক বার্তা পাঠাতে চাইছে—যা আপাতভাবে নিষ্পাপ হলেও তাৎপর্যপূর্ণ।
এই হামলার পর ভারত একাধিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। পাকিস্তানের এক্স (প্রাক্তন টুইটার) অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। আত্তারি সীমান্তের সমন্বিত চেকপোস্টও বন্ধ করা হয়েছে, যদিও ১ মে পর্যন্ত বৈধ কাগজপত্রধারী ব্যক্তিরা ফিরতে পারবেন। এমন ভয়াবহ হামলার পরেও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান Syed Asim Munir Ahmed Shah এখনো পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। আন্তর্জাতিক মহলে তার নীরবতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ভারতীয় গোয়েন্দা মহলের মতে, পাকিস্তানের সেনা প্রশাসন এই জঙ্গি হামলার নেপথ্যে পরোক্ষ মদত দিচ্ছে।
অনেকে দাবি করছেন, সেনাপ্রধান ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, বরং সন্ত্রাসীদের রক্ষা করতে সচেষ্ট। এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জাতীয় নিরাপত্তা বৈঠক ডেকেছেন, যেখানে ভারতের “দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ” নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। একদিকে, কাশ্মীরের পর্যটনের শান্ত পরিবেশে রক্তাক্ত আক্রমণ, অন্যদিকে কূটনৈতিক মঞ্চে রহস্যময় আচরণ—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে আরও বেশি জটিল ও রহস্যময়।