LeT Abdul Aziz dead Op Sindoor

ব্যুরো নিউজ ২৪ জুলাই ২০২৫ : ২০০১ সালের ভারতীয় সংসদ হামলা এবং ২৬/১১ মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী লস্কর-ই-তৈবার ভয়ংকর সন্ত্রাসী আব্দুল আজিজ পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরের একটি হাসপাতালে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু বরণ করেছে। সূত্র অনুযায়ী, ৬ই মে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অধীনে পরিচালিত একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সে গুরুতর আহত হয়েছিল। আব্দুল আজিজ লস্কর-ই-তৈবার ডেপুটি প্রধান সাইফউল্লাহ কাসুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল। তার মৃত্যু লস্কর-ই-তৈবার জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।

কে ছিল লস্কর সন্ত্রাসী আব্দুল আজিজ?

আব্দুল আজিজ পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার একজন শীর্ষ অর্থায়নকারী এবং কৌশলগত মডিউল সমন্বয়কারী ছিল। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অধীনে ভারতের সুনির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত হওয়ার পর সে তার আঘাতের কাছে হার মেনেছে। তার শেষকৃত্যের ছবি, যা বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে লস্করের সিনিয়র নেতা যেমন ডেপুটি প্রধান সাইফউল্লাহ কাসুরী এবং আবদুর রউফকে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে।

অপারেশন সিঁদুরে ৮ F-16, ৪ JF-17 ভূপাতিত; বিপুল ক্ষতি পাক বিমান বাহিনীর

লস্করের জন্য এক বড় আঘাত

আব্দুল আজিজ লস্করের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মঠ এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংযোগ ছিল। সে উপসাগরীয় দেশগুলি, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত কট্টরপন্থী ইসলামিক গোষ্ঠী এবং পাকিস্তানি সম্প্রদায়গুলি থেকে তহবিল সংগ্রহ করত বলে জানা গেছে। অর্থায়ন ছাড়াও, আজিজ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য লজিস্টিক, অস্ত্র সরবরাহ এবং নিয়োগের কাজ পরিচালনা করত। তার মৃত্যু লস্কর-ই-তৈবার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ধাক্কা হিসাবে দেখা হচ্ছে, যা তাদের কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভকে ভেঙে দিয়েছে।

ভারতের বড় হামলাগুলিতে জড়িত থাকার ইতিহাস

আব্দুল আজিজ ভারতের বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। যদিও সে সরাসরি হামলার পরিকল্পনা করেনি, তবে তহবিল এবং সংস্থান সরবরাহের মাধ্যমে সে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ২০০১ সালের সংসদ হামলার জন্য পাকিস্তান থেকে অর্থ ও সরঞ্জাম সরবরাহে সে সহায়তা করেছিল। ২০০৬ সালের মুম্বাই লোকাল ট্রেন বিস্ফোরণেও সে অর্থায়ন করেছিল বলে মনে করা হয়। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার সময়, আজিজ সমুদ্রপথে অস্ত্র এবং স্যাটেলাইট ফোন সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সে জম্মু ও কাশ্মীর-এর স্থানীয় সন্ত্রাসী মডিউলগুলিতেও অর্থায়ন করত এবং যুবকদের জঙ্গিবাদের দিকে উস্কে দিতে এবং নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।

Donald Trump : অপারেশন সিঁদুরের প্রকোপে সন্ত্রস্ত হয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ! দ্রুত যুদ্ধবিমানের পতন সংখ্যা থামালো বাণিজ্য নীতি ?

‘অপারেশন সিঁদুর’: প্রেক্ষাপট ও লক্ষ্য

‘অপারেশন সিঁদুর’ ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে লস্কর-ই-তৈবার মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের দ্বারা ২৬ জন নিরীহ পর্যটক হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের একটি সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান। ৭ই মে, ২০২৫-এ ভারত ঘোষণা করে যে তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে এবং পাকিস্তান-শাসিত আজাদ কাশ্মীর জুড়ে নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে, যার সাংকেতিক নাম ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই অপারেশনটি সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছিল, যেখানে কোনো পাকিস্তানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করা হয়নি। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেওয়া এবং তাদের অবকাঠামো ভেঙে দেওয়া, যা ভবিষ্যতে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর ক্ষমতাকে সীমিত করবে। আব্দুল আজিজের মতো একজন উচ্চপদস্থ এবং আর্থিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসীর মৃত্যু এই অভিযানের একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর