ব্যুরো নিউজ ১৩ জুন: পর্যটকদের অনেক আগেই নিরাপদে সরিয়ে আনা সম্ভব হলেও, উত্তর সিকিমের বাস্তব পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক ও অনিরাপদ। ধস, সেতু ভাঙন এবং রাস্তায় ফাটলের কারণে এখনো বহু রাস্তায় নিয়ন্ত্রিত যান চলাচল চালু রয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন চরম ভাবে ব্যাহত হয়েছে।
সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও ভৌগলিক অস্থিরতার জেরে মঙ্গন থেকে চুংথাং পর্যন্ত ভায়া টুং নাগা নিউ রোড সম্পূর্ণ বন্ধ। মঙ্গন থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত ফুডং রোডে শুধুমাত্র হালকা গাড়ি চলাচলের অনুমতি মিলেছে। কিন্তু ভারী গাড়ি বা পণ্য পরিবহন নিষিদ্ধ, বিশেষ করে ডেটখোলা সেতুর ভগ্নদশার জন্য। এই সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকায় কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে।
নওশাদের আইএসএফকে ফের নিশানা শওকতের: ‘গোটা বাংলা থেকে উঠে যাবে’
এছাড়া, মঙ্গন থেকে সাংকালান রোডও বন্ধ রয়েছে, কারণ সাংকালান সেতু ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং এখনও পর্যন্ত মেরামতির কাজ শুরু হয়নি। চুংথাং থেকে লাচেন যাওয়ার পথে মুন্সিথাং অঞ্চলে ব্যাপক ধস শুরু হয়েছে, ফলে রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। আবার লাচেন থেকে থাঙ্গু যাওয়ার পথে জিমা সংলগ্ন এলাকায় ধসের কারণে ওই রোডও সম্পূর্ণ বন্ধ।
তবে কিছুটা স্বস্তির খবর—থাঙ্গু থেকে গুরুদংমা পর্যন্ত রাস্তাটি খোলা রয়েছে এবং সেখান দিয়ে নিয়ন্ত্রিত চলাচল সম্ভব। কিন্তু বাকিরা এখনও দূর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
রানি ভবানীর গল্প ঘিরে দুই চ্যানেলের লড়াই, ছোট পর্দায় ফিরছেন কি সন্দীপ্তা সেন?
এই পরিস্থিতির কারণে, উত্তর সিকিমে পর্যটন যেমন ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, তেমনি স্থানীয়দের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপেও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। অনেক গ্রামে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে, কারণ যানবাহন পৌঁছাতে পারছে না।
পর্যটকরা ফিরে গেলেও, সিকিমবাসীর জন্য লড়াইটা এখনও চলছে—প্রতিদিন ঘর থেকে বেরোনোর সময়ই তাঁদের অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। সেতু এবং রোড মেরামতির কাজ শুরু হলেও, পূর্ণ স্বাভাবিকতা ফিরতে আরও কিছু সময় লাগবে বলেই প্রশাসনের মত। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধার ও পুনর্গঠন প্রকল্পে নজর দেওয়া হলেও, স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন—কবে নাগাদ মিলবে প্রকৃত স্বস্তি?
উত্তর সিকিমের এই অবস্থা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—পর্যটননির্ভর এই অঞ্চলে অবকাঠামোগত দুর্বলতা কতটা গভীর। এখন দেখার, কত দ্রুত প্রশাসন এই ধস পরিস্থিতি সামলে সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফেরাতে পারে।