ব্যুরো নিউজ ,৬ মে: ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর এই প্রথম দেশজুড়ে বিশাল আকারের অসামরিক মহড়া হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে বুধবার দেশের ২৭টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ২৫৯টি স্থানে এই মহড়া হবে। তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের ৩১টি জায়গার নামও রয়েছে।
সীমান্ত চৌকির কাছে লুকিয়ে পাকিস্তানি!গুরদাসপুরে ঝোপের মধ্যে ধরা পড়ল পাকিস্তানি নাগরিক
হামলার সময় আড়াল করার প্রস্তুতি
এই মহড়ার মূল লক্ষ্য সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে সচেতন করে তোলা। বিশেষ করে বিমান হামলার সময় কীভাবে দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়েই হবে মূল প্রশিক্ষণ।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যগুলোকে পাঠানো নির্দেশে জানিয়েছে, মহড়ায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক খতিয়ে দেখা হবে। প্রথমত, বিমান হামলার সময় সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা কতটা কার্যকর তা পরীক্ষা করা হবে। একই সঙ্গে রাতে হামলার পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ আলো নিভিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’-এরও মহড়া চলবে, যাতে শত্রুপক্ষ বিভ্রান্ত হয়।
ভারতের সেনা ওয়েবসাইটে পাকিস্তানের সাইবার হানা! তড়িঘড়ি ‘অফলাইন’ সিদ্ধান্ত
এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো যেমন ব্রিজ, তেল ডিপো, রেলস্টেশন, বিমানবন্দর ইত্যাদি হামলার সময় আড়াল করার প্রস্তুতিও সেরে রাখতে বলা হয়েছে। এসব স্থাপনাকে আচ্ছাদন বা লুকিয়ে রাখার কাজ আগে থেকেই অনুশীলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে।নাগরিকদের অসামরিক প্রতিরক্ষা (সিভিল ডিফেন্স) বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়াও এই মহড়ার একটি বড় দিক। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া, অসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক, হোমগার্ড এবং জেলা প্রশাসকদের নিয়ে একযোগে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে নাগরিকদের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে তা মহড়ার সময় অনুশীলন করতে হবে।
মহড়ায় আরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বায়ুসেনা ঘাঁটির সঙ্গে হটলাইন সংযোগ স্থাপন ও কন্ট্রোল রুমের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার দিকেও। কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি ছায়া কন্ট্রোল রুমও কতটা সক্রিয় রয়েছে তা এই মহড়ার মাধ্যমে যাচাই করা হবে।
মহড়ায় কী কী থাকবে:
বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেনের কার্যকারিতা পরীক্ষা
নাগরিকদের সিভিল ডিফেন্স প্রোটোকলের প্রশিক্ষণ
ব্ল্যাকআউট মহড়া (হঠাৎ আলো নিভিয়ে দেওয়া)
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার আড়াল বা সুরক্ষার অনুশীলন
জরুরি সময়ে দ্রুত সুরক্ষিত স্থানে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ
বায়ুসেনা ঘাঁটির সঙ্গে হটলাইন সংযোগ যাচাই
কন্ট্রোল রুম এবং ছায়া কন্ট্রোল রুমের প্রস্তুতির পরীক্ষা
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার আবহে এই মহড়া বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, দেশজুড়ে নাগরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করে সম্ভাব্য যেকোনও বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুতি রাখা হোক।