ব্যুরো নিউজ ৫ জুন : কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তিনি ওড়িশার পুরীর প্রাক্তন সাংসদ এবং প্রবীণ আইনজীবী পিনাকী মিশ্রকে বিয়ে করেছেন। গত মাসে জার্মানির বার্লিন প্রাসাদের ছাদে এই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। ৬৫ বছর বয়সী পিনাকী মিশ্র এবং ৫১ বছর বয়সী মহুয়া মৈত্র, দু’জনেরই এটি দ্বিতীয় বিবাহ। সাধারণত ডেস্টিনেশন ওয়েডিং বলিপাড়ার সেলেবদের মধ্যে দেখা গেলেও, রাজনীতিকদের বিদেশ বিভুঁইয়ে বিয়ের ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না, যা এই বিবাহকে ঘিরে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে রীতিমতো চর্চা শুরু করেছে।
পোশাক ও ঘনিষ্ঠ মহলের প্রতিক্রিয়া
বিয়ের অনুষ্ঠানে মহুয়াকে ঘিয়ে ও পিঙ্ক রঙের শাড়ি এবং গয়নার সাজে দেখা গেছে। পিনাকীর পরনে ছিল কুর্তা, পাজামা ও জহর কোট। দু’জনের পোশাকের রঙে মিলও লক্ষ্য করা গেছে। শোনা গেছে, পিনাকীর সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই মহুয়ার বন্ধুত্ব ছিল। তাঁদের ঘনিষ্ঠ মহল এই বিয়ের কথা জানতেন। তবে, তৃণমূল সূত্রে খবর, মহুয়া প্রায় চুপিচুপিই বিয়ে সেরেছেন এবং দল এই বিষয়ে কিছু জানত না। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
মহুয়া ও পিনাকীর ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক পরিচিতি
মহুয়া মৈত্র তৃণমূল সাংসদ হিসেবে সংসদে তাঁর জ্বালাময়ী ভাষণের জন্য প্রায়শই খবরের শিরোনামে থাকেন, যা সকলেরই নজর কাড়ে। তার বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সমাজমাধ্যমে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। মহুয়া দীর্ঘ দিন ধরে আমেরিকার অর্থলগ্নি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন এবং সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্টও ছিলেন। সেই সময় ডেনিশ ফিনান্সার লার্স ব্রর্সনের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে বিয়ে হয়। তবে, পরে মহুয়ার সঙ্গে লার্সের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
অন্যদিকে, পিনাকী মিশ্র ১৯৫৯ সালে ওড়িশার পুরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং আইনজীবী। সেন্ট স্টিফেনস কলেজ থেকে ইতিহাসে বিএ (অনার্স) এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিনাকী মিশ্র কংগ্রেসের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন এবং ১৯৯৬ সালে পুরী লোকসভা আসন থেকে জয়লাভ করেন। পরে তিনি নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দলে (বিজেডি) যোগ দেন এবং ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও পুরী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। যদিও গত লোকসভা ভোটে বিজেডি তাঁকে টিকিট দেয়নি।
রাজনৈতিক গুঞ্জন: প্রার্থী না হওয়ার কারণ?
রাজনীতির অন্দরমহলে গুঞ্জন রয়েছে যে, মহুয়ার সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই বিতর্ক এড়াতে বিজেডি পিনাকীকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেনি। পিনাকীর প্রথম বিয়ে হয়েছিল ওড়িশা নিবাসী সঙ্গীতা মিশ্রের সঙ্গে। তাঁদের এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানও রয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগেই পিনাকী এবং সঙ্গীতার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। মহুয়া মৈত্রর ক্ষেত্রেও, লার্স ব্রর্সনের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি তিন বছর ধরে অ্যাডভোকেট জয় অনন্ত দেহাদ্রাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন বলে জানা যায়, তবে পরে তাঁদেরও সম্পর্ক ভেঙে যায়।