ব্যুরো নিউজ ২৭ অক্টোবর ২০২৫ : দীপাবলি (Diwali 2025) উদযাপন এবং ভারতীয়দের সম্পর্কে কানাডার এক চরম ভারত-বিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী ব্যক্তির মন্তব্যে সমর্থন জানিয়ে নতুন বিতর্কে জড়ালেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ওই ব্যক্তি দীপাবলি উদযাপন নিয়ে ভারতীয়দের তীব্র অপমান করে ‘ব্রেনডেড’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং দীপাবলিকে ‘আবর্জনা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
এই ধরনের ভারত-বিরোধী মন্তব্যে একজন ভারতীয় সাংসদের প্রকাশ্যে ‘আমি সহমত’ (I agree) মন্তব্য করায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বিতর্কের সূত্রপাত এবং বিজেপি-র অভিযোগ
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ (আগের টুইটার) হ্যান্ডল NATE @CelticAshes থেকে এই বিতর্কিত পোস্টটি করা হয়েছিল। ওই ব্যক্তি কানাডার নোভা স্কটিয়া প্রদেশের কেপ ব্রেটন দ্বীপের বাসিন্দা এবং তাঁর হ্যান্ডল থেকে নিয়মিত ভারত-বিরোধী পোস্ট করা হয়। এই পোস্টগুলিতে অনেকে ভারতীয়দের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। এমন একটি বিদ্বেষমূলক পোস্টে মহুয়া মৈত্রের ‘আমি সহমত’ মন্তব্যটির স্ক্রিনশট ভাইরাল হতেই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে।
রাজ্য বিজেপি এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে পোস্ট করে। বিজেপি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “এই মহুয়া মৈত্রই একবার দেবী কালীকে মাংস ও মদের দেবী বলেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো। তিনি বিলাসবহুল ব্যাগের বিনিময়ে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছিলেন।” বিজেপি-র পক্ষ থেকে ভারত-বিরোধী, হিন্দু-বিরোধী এবং মতুয়া-বিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ তুলে কৃষ্ণনগরের সাংসদের তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে।
মহুয়ার ‘ভুল স্বীকার’ এবং সমালোচকদের পাল্টা দাবি
বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার পর মহুয়া মৈত্র তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডলে আত্মপক্ষ সমর্থন করে একটি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন:
“আমার ট্যুইটার ফিডে অনেক ভিডিও দেখাচ্ছিল। ন্যাটে নামে ওই বর্ষবিদ্বেষীর ভিডিওর নীচের ভিডিওতে আমি সহমত লিখতে গিয়েছিলাম। আমি ভ্রমণ করছিলাম। এখনও পর্যন্ত কিছু খতিয়ে দেখিনি। আমি সত্যিই ভুল করেছি। দুঃখিত ট্রোলস।”
মহুয়া তাঁর পোস্টে ভুল স্বীকার করে ‘দুঃখিত ট্রোলস’ ( যা এক প্রকার তাচ্ছিল্যের সুর ) লিখলেও, যে ভিডিওতে তিনি ‘আমি সহমত’ লিখেছিলেন, সেই মন্তব্যটি মুছে ফেলেছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হতেই তিনি ওই মন্তব্যটি মুছে ফেলেছেন। সমালোচকরা বলছেন, তিনি ভারত-বিরোধী মন্তব্য সমর্থন করার জন্য সরাসরি ক্ষমা চাননি। শুধুমাত্র মন্তব্যটি অস্বীকার করতে না পারায় ‘ভুল করেছি’ বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
মহুয়া মৈত্রের এই ধরনের মন্তব্য তাঁর জন্য নতুন নয়, তবে দীপাবলির মতো জাতীয় উৎসব এবং ভারতীয়দের নিয়ে সরাসরি বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে তাঁর সমর্থন ভোটের আগে তাঁর অস্বস্তি আরও বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।



















