CJI Gavai and Suryakant

ব্যুরো নিউজ ২৭ অক্টোবর ২০২৫ : ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণতম বিচারপতিদের মধ্যে অন্যতম বিচারপতি সূর্য কান্ত দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India – CJI) হিসেবে নিযুক্ত হতে চলেছেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি (CJI) ভূষণ রামকৃষ্ণ গাওয়াই (B R Gavai) তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে বিচারপতি সূর্য কান্তের নাম সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়েছেন। এই সুপারিশের মাধ্যমেই দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে গেল।

 

কার্যকাল এবং পদ্ধতি

মেমোরেন্ডাম অফ প্রসিডিউর (MoP) অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণতম বিচারপতিকেই পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুপারিশ করা হয়। সেই প্রথা মেনেই বিচারপতি গাওয়াইয়ের পর প্রবীণতম বিচারপতি সূর্য কান্তের নাম সুপারিশ করা হয়েছে।

বিচারপতি বি আর গাওয়াই ৬৫ বছর বয়সে পৌঁছে ২০২৫ সালের ২৩ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন। তাঁর অবসরের পর, বিচারপতি কান্ত ২০২৫ সালের ২৪ নভেম্বর দেশের ৫৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। তিনি ২০২৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় ১৫ মাস এই পদে থাকবেন।

Supreme Court : বিচারপতি গাভাইকে জুতো ছোড়ার ঘটনায় অনুতপ্ত নন অভিযুক্ত আইনজীবী, তীব্র নিন্দা করলেন মোদি-মমতা

 

কে এই বিচারপতি সূর্য কান্ত?

১৯৬২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার হিসারে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। আইনি জীবনে তাঁর রয়েছে এক উজ্জ্বল কর্মজীবন। সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত হওয়ার আগে তিনি হরিয়ানার অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং অল্প বয়সেই সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে মনোনীত হন।

২০১৯ সালের ২৪ মে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। বর্তমানে তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ল, রাঁচির পরিদর্শক হিসেবে এবং ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির (NALSA) এক্স অফিসিও কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করছেন।

Supreme Court : বিচার ব্যবস্থায় হিন্দু ধর্ম ও বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক: একের পর এক ঘটনায় বাড়ছে ক্ষোভ

গুরুত্বপূর্ণ রায় ও অবদান

বিচারপতি সূর্য কান্ত বহু ঐতিহাসিক রায়ের অংশ ছিলেন, যা দেশের আইন ও গণতন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নরূপ:

  • ৩৭০ ধারা বিলোপ: তিনি জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের ওপর ঐতিহাসিক রায় প্রদানকারী বেঞ্চের সদস্য ছিলেন।
  • রাষ্ট্রদ্রোহ আইন: ব্রিটিশ আমলের রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত রেখে নতুন করে এই ধারায় এফআইআর নথিভুক্ত করা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া বেঞ্চের সদস্য ছিলেন তিনি।
  • নির্বাচনী স্বচ্ছতা: বিহারে বাদ পড়া প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের তথ্য প্রকাশের জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা নির্বাচনী স্বচ্ছতার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারকে তুলে ধরে।
  • লিঙ্গ সমতা: তিনি বার অ্যাসোসিয়েশনগুলিতে (সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন সহ) মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়ে ইতিহাস তৈরি করেন।
  • জাতীয় নিরাপত্তা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২০২২ সালের পাঞ্জাব সফরকালে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা বেঞ্চের অংশ ছিলেন তিনি। এই বেঞ্চ জানিয়েছিল, “জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে রাষ্ট্র অবাধ ছাড় পেতে পারে না”
  • ওআরওপি (OROP): তিনি প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য ‘ওয়ান র্যাঙ্ক-ওয়ান পেনশন’ (OROP) প্রকল্পকে সাংবিধানিকভাবে বৈধ বলে রায় দেন এবং সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনের সমতার দাবিতে করা আবেদনের শুনানি চালিয়ে যাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর