ব্যুরো নিউজ, ৮ মার্চ: ২০২৪ সালে ভারতে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন হতে চলেছে। ভারতের ৫৪৩ টি সংসদীয় কেন্দ্রের মধ্যে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রটি অন্যতম। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার পূর্ব-পশ্চিম অঞ্চল নিয়ে এই কেন্দ্রটি গঠিত। ২২ নম্বর যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় অবস্থিত।
ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারীর ‘মার্কসিট’
২০০৯ সাল থেকে ভারতের সীমানা পুনঃ নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে যে বিধানসভা গুলি অন্তর্গত তা হল, বারুইপুর পূর্ব (এসসি), বারুইপুর পশ্চিম, সোনারপুর, সোনারপুর উত্তর, ভাঙ্গর, যাদবপুর, টালিগঞ্জ। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদীর গড়ছিল এই যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র। ১৯৯৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণ বসুর হাত ধরে ঘটে পরিবর্তন।
২০১৯ সালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৮৮ হজার ৪৭২ টি, দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ২৩৩ টি। নির্দল প্রার্থী কার্তিক কয়েল ভোট পেয়েছিলেন ৯ হজার ৩৭৮টি। পার্টি অফ ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিজম দলের প্রার্থী অনুরাধা পুতাতুন্ডু ভোট পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৫৪৯ টি।
মিমি চক্রবর্তী ১১ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ সালে জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম অরুণ চক্রবর্তী এবং মায়ের নাম তাপসী চক্রবর্তী। অরুণাচল প্রদেশের টিরাপ জেলার দিওমালিতে তার ছোটবেলা কাটে। জলপাইগুড়ির সেন্ট জেমস স্কুল থেকে তিনি পড়াশোনা করেন। ২০১১ সালে কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে ব্যাচেলার অফ আর্টস ডিগ্রি সংগ্রহ করেন। মডেলিং থেকে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। ফেমিনা মিস ইন্ডিয়াতে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ছোট পর্দার সিরিয়াল থেকে শুরু হয় তার অভিনয় জগতের যাত্রা। ধীরে ধীরে ছোট পর্দা থেকে পা রাখেন বড় পর্দায়। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন রাজ্যবাসীকে। বাপি বাড়ি যা, প্রলয়, কাঠমান্ডু, আমার আপনজন ইত্যাদি তার জনপ্রিয় ছবি। অভিনয়ের পাশাপাশি গায়িকা হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। মিমি চক্রবর্তী একজন পশু প্রেমি। সারমেয়দের জন্য তাকে আওয়াজ তুলতে দেখা গেছে সংসদে। ২০১৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজনীতিতে পদার্পণ। আর এরপরই টিকিট মেলে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন মিমি চক্রবর্তী।
১ জুন ২০১৯ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এই পাঁচ বছর সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর সংসদে কর্ম ক্ষমতা ছিল :
সংসদে পাঁচ বছরে উপস্থিতির হার ২১ শতাংশ।
সংসদে পাঁচ বছরে বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছেন ৭টি।
সংসদে পাঁচ বছরে প্রশ্ন করেছেন ১৬১ টি।
সংসদে পাঁচ বছরে ব্যক্তিগত সদস্য বিলের সংখ্যা শূন্য।
পাঁচ বছরে সংসদে তিনি যে সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে বিতর্ক করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কেন্দ্রীয় বাজেট, অমানবিক হিংসার শিকার পথ কুকুর, যাদবপুরে চম্পাহাটি রেলওয়ে স্টেশনের ফ্লাইওভার প্রসঙ্গ।
পাঁচ বছরে সংসদে প্রশ্ন করেছেন যে সমস্ত বিষয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দেশের আভ্যন্তরীণ পণ্য উৎপাদনে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের ভূমিকা, নদীগুলির সংযুক্তিকরণ, বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব, চিকিৎসার জন্য ভিন রাজ্যে যাবার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিকাঠামো-সহ রেল পথে রোগীদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা, অরণ্য নিধনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব।