ভারতের প্রথম সোলার মিশন আদিত্য L1। চাঁদের পর এবার সূর্যের দিকে নজর ভারতের। অনেকেই হয়তো ভাবছেন সূর্যের কাছে যাওয়া একেবারে অসম্ভব। সূর্যের প্রচন্ড তাপে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে আদিত্য L1। না তা একেবারেই নয়, পৃথিবীত থেকে সূর্যের দূরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার। সেখানে আদিত্য মাত্র ১৫ লক্ষ কিলোমিটার পথ গিয়ে থেমে যাবে। অর্থাৎ আদিত্য L1 সূর্য থেকে ১৪ কোটি ৮৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করবে। ফলে আদিত্য L1 এর কোনরকম ক্ষতি করতে পারবে না সূর্য।
ভারতের প্রথম সোলার মিশন এর নাম আদিত্য দেওয়া হল কেন?
আদিত্য এটি সংস্কৃত শব্দ যা সূর্যেরই আর এক নাম। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় সূর্য হল একটি তারা কিন্তু হিন্দু ধর্মে সূর্যকে দেবতা রূপে চিহ্নিত করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মে সূর্যকে সূর্য নারায়ণও বলা হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী সূর্যের অনেক বড় গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে সূর্য নারায়ণ ঋষি কাশ্যপ এবং দেবী অদিতির সন্তান। তাই সূর্যের আরেক নাম আদিত্য। হিন্দু সংস্কৃতিকে বিশ্বের সমস্ত মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য এই সোলার মিশনের যানের নাম দেওয়া হয়েছে আদিত্য L1।
ISRO সূর্যযানের আদিত্য L1 নাম কেন
আদিত্য নামের সাথে কেন L1 যুক্ত করা হলো?
L ইংরেজি শব্দ lagrange কে বোঝানো হয়েছে। Lagrange হল একটি বিন্দু। যা, পৃথিবী থেকে 15 লক্ষ কিলোমিটার দূরে পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝের একটি অংশ হ্যালো কক্ষপথের উপর অবস্থিত বিন্দু ।
অর্থাৎ lagrange পয়েন্ট হল মহাকাশের এমন একটি জায়গা যেখানে সূর্য এবং পৃথিবীর মতো দুটি বিশাল ভর যুক্ত জিনিসের মাধ্যাকর্ষিও টানের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারে মহাকাশযানের মত ছোট কোন বস্তু। মহাকাশ গবেষণায় বেশ কয়েকটি lagrange পয়েন্টের কথা বলা হয়েছে ।গবেষণার সুবিধার্থে বিজ্ঞানীরা সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিন্দুগুলিকে lagrange পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। L1,L2,L3,L4,L5 এরূপ পাঁচটি Lagrange পয়েন্ট ব্যবহার করা হয়েছে মহাকাশ গবেষণায়। এরূপ পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ Lagrange পয়েন্ট হল L2 যেটি পৃথিবীর বিপরীত দিকে চাঁদের সঙ্গে একটি সরলরেখায় অবস্থিত। এই পয়েন্টগুলি ব্যবহার করলে মহাকাশযানের জন্য খরচ হয় ন্যূনতম জ্বালানি। তাই মহাকাশ গবেষণায় এই পয়েন্ট গুলির খুবই গুরুত্ব রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই পয়েন্ট থেকে সূর্যকে সম্পূর্ণ আকারে দেখা যায়।
ISRO সূর্যযানের আদিত্য L1 নাম কেন