ব্যুরো নিউজ ২৭ মে : আমের মরসুম মানেই বাঙালির পাতে হিমসাগরের মিষ্টি গন্ধ। কিন্তু ইদানীং বাজার ছেয়ে গেছে নকল হিমসাগরে, যা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ফল বিক্রেতারা অন্য জাতের আমকে হিমসাগর বলে বিক্রি করছেন, ফলে আসল হিমসাগরের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ক্রেতারা। তাই, আসল হিমসাগর চেনার কিছু সহজ উপায় জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
কখন ও কোথায় মেলে হিমসাগর? হিমসাগর আম সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যায়। এটি একটি মধ্য-মৌসুমী আম। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় এই আম মূলত পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হুগলি এবং নদিয়া জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও সাতক্ষীরা অঞ্চলেও এর ব্যাপক ফলন হয়।
বেদে মাংস ভক্ষণের সমর্থন নেই – প্রমাণসহ তথ্য !
হিমসাগর চেনার সহজ উপায়:
- ওজন ও আকার: একটি খাঁটি হিমসাগর আমের ওজন সাধারণত ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রামের মধ্যে হয়। এর বেশি ওজন হলে তা হিমসাগর নাও হতে পারে। আকার খুব বড়ও হয় না, আবার খুব ছোটও হয় না, মাঝারি আকারের হয়।
- আঁশ ও ভেতরের রঙ: হিমসাগর আমে আঁশ খুব কম থাকে, প্রায় আঁশবিহীন বলা চলে। এর ভেতরের শাঁস হয় উজ্জ্বল হলুদ অথবা কমলা রঙের। যদি দেখেন আমের ভেতরে আঁশ বেশি, তবে সেটি হিমসাগর না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
- ত্বকের রঙ ও গঠন: হিমসাগর পাকলে তার ত্বক হালকা হলুদ বা সোনালী রঙের হয়। এর আকার মোটামুটি গোলাকার হয়, লম্বাটে নয়।
- গন্ধ: হিমসাগর আমের একটি অনন্য মিষ্টি সুবাস রয়েছে, যা অন্য আমের জাত থেকে একে আলাদা করে তোলে। কেনার আগে আম শুঁকে এই মিষ্টি গন্ধটি নিশ্চিত করতে পারেন।
- পাকা আমের বৈশিষ্ট্য: অতিরিক্ত পাকা বা পুরনো হিমসাগর আমের ত্বকে হালকা ভাঁজ পড়ে যায় এবং রঙ গাঢ় হলুদ হয়ে যায়।
হিমসাগর দিয়ে কী কী পদ তৈরি করা যায়? কেবল ফল হিসেবে সরাসরি খাওয়া ছাড়াও হিমসাগর আম দিয়ে তৈরি হয় নানা সুস্বাদু পদ। এর মিষ্টি ও সুগন্ধযুক্ত শাঁস দিয়ে তৈরি হয় আমের জুস, মিল্কশেক, আমসত্ত্ব, জ্যাম, জেলি, চাটনি এবং বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। অনেকে দুধ-ভাত দিয়ে হিমসাগর আম খেতেও ভালোবাসেন। এর সুমিষ্ট স্বাদ যেকোনো পদকে আরও লোভনীয় করে তোলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রুত লাভের আশায় নিম্নমানের আমকে হিমসাগর বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। তাই ক্রেতাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। উপরের নির্দেশিকাগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই আসল হিমসাগর আম চিনতে পারবেন এবং ভেজাল এড়িয়ে গ্রীষ্মের এই প্রিয় ফলটির আসল স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।