ব্যুরো নিউজ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : গতকাল রাত থেকে ১০ ঘণ্টা টানা অঝোর ধারায় বৃষ্টিতে কার্যত বানভাসি হয়ে পড়েছে কলকাতা। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সব জায়গাই জলের তলায়। শুধু কলকাতা নয়, সল্টলেক, হাওড়া এবং আশেপাশের এলাকাতেও একই পরিস্থিতি। রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে গড়ে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০০৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরের বৃষ্টির পরিমাণকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।
শহর জুড়ে বৃষ্টির পরিসংখ্যান
পুরো কলকাতা জুড়ে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বৃষ্টির পরিমাণ নিচে দেওয়া হলো:
- পার্ক স্ট্রিট: ১৮৪ মিমি
- বড়বাজার: ১৬২ মিমি
- ভবানীপুর: ২৪৩ মিমি
- বালিগঞ্জ: ২৯৫ মিমি
- গড়িয়াহাট: ২৬২ মিমি
- যাদবপুর: ২৫৮ মিমি
- আলিপুর: ২৪০ মিমি
- বেহালা: ২১৫ মিমি
- গড়িয়া: ২৭০ মিমি
- মুকুন্দপুর: ২৮০ মিমি
- কসবা: ২৪৬ মিমি
- মানিকতলা: ১৬৯ মিমি
- তপসিয়া: ২৭৫ মিমি
- যোধপুর পার্ক: ২৮৫ মিমি
- কদমহরি: ৩৩২ মিমি
শহরতলির মধ্যে সল্টলেক সেক্টর ২-এ ১৫৪ মিমি, নিউটাউনে ১৮৬ মিমি, বাগুইহাটিতে ১২১ মিমি এবং দক্ষিণ দমদমে ৬১ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট যে কেন পুরো শহর জলের তলায়।
শিলাবতী নদীর প্রকোপে ঘাটাল ফের জল মগ্ন , ডুবল ভিত্তিহীন মাস্টার প্লান
জনজীবন বিপর্যস্ত, থমকে ট্রেন ও মেট্রো
টানা বৃষ্টির জেরে শহরের লাইফলাইন বলে পরিচিত রেল এবং মেট্রো পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিয়ালদহ মেন এবং বনগাঁ শাখায় রেললাইনে জল জমে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। হাওড়া এবং শিয়ালদহ কারশেডেও জল জমেছে। দমদম স্টেশনে ট্রেন প্রবেশ করতে না পারায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কলকাতা মেট্রোর কিছু স্টেশনে জল ঢুকে যাওয়ায় মেট্রো চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন প্রধান রাস্তা যেমন ভিআইপি বাজার, কাঁকুড়গাছি, নিউটাউন এবং বাইপাসে জল জমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। ভোর হতেই শহরের স্বাভাভিক জীবনযাপনে নেমে আসে বিপত্তি ।
পুজোর প্রস্তুতিতে বড় ধাক্কা
আর কিছুদিনের মধ্যেই দুর্গাপূজা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি এখন পুরোদমে চলছে। কিন্তু এই রাতভর বৃষ্টিতে পুজো কমিটিগুলির মাথায় হাত। বিভিন্ন জায়গায় নির্মীয়মাণ প্যান্ডেল ভেঙে পড়েছে, কোথাও বা পুজোর সরঞ্জাম ভেসে গেছে। এই পরিস্থিতিতে পুজোর কাজ কবে স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে আয়োজকরা চিন্তিত।
Kolkata : ভারী বর্ষণে কলকাতা জল্মগ্ন ! ভেনিসের মতন হয়ে উঠল মহানগর !
স্কুল ও কলেজ বন্ধ
শহরের এই পরিস্থিতির কারণে বেশ কিছু স্কুল তাদের পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই জল নিষ্কাশনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন, কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।