worship hanumanji on tuesday

ব্যুরো নিউজ,  ২৫শে নভেম্বর ২০২৫ : বারবেলার দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার, শক্তি ও পরাক্রমের অধিপতি শ্রী হনুমানজির পূজার জন্য বিশেষভাবে উৎসর্গীকৃত। এই দিনটিই সবথেকে শক্তিশালী দিন রূপে বিবেচিত হয়, যেদিন শুদ্ধ ভক্তি ও নিষ্ঠার সহিত হনুমানজির আরাধনা করে তাঁর কৃপা এবং সুরক্ষা লাভ করা যায়। শ্রী হনুমানজিকে রক্ষা কর্তা, শুদ্ধ ভক্তি ও ইচ্ছাশক্তির প্রতীক এবং বজরংবলী বা সংকটমোচন নামেও অভিহিত করা হয়। ভক্তগণ বিশ্বাস করেন, তাঁহাকে ভক্তিভরে ডাকিলে তিনি জীবনের সকল বাধা দূর করেন।

মঙ্গলবার হনুমান পূজার গুরুত্ব

যে ব্যক্তি শ্রী হনুমানজির পূজা করেন, তিনি নির্ভীক হন এবং তাঁহার চারপাশের আভা পবিত্র ও সুরক্ষামূলক হইয়া ওঠে। যে সকল ব্যক্তি নিজেদের শত্রুদের দ্বারা পরিবেষ্টিত মনে করেন, তাঁহাদের জন্য এই মঙ্গলবার হনুমানজির বিশেষ আরাধনা অত্যন্ত ফলদায়ক। হনুমানজিকে অষ্ট চিরঞ্জীবীর (যাঁহারা অমর) মধ্যে অন্যতম বলিয়া গণ্য করা হয়। গভীর বিশ্বাস ও শুদ্ধ সংকল্পের সহিত তাঁহার পূজা করিলে তিনি স্বয়ং ভক্তকে রক্ষা করেন, সবকিছু তত্ত্বাবধান করেন এবং তাঁহার আভাকে দৃঢ় ও শক্তিশালী করিয়া তোলেন।

সনাতন ধর্মের মহাজাগতিক সংহতি : বিষ্ণুর অবতার ও নবগ্রহ

আপনি যদি শ্রী হনুমানজির সুরক্ষা লাভ করিতে চান, তবে নিম্নোক্ত অভ্যাসগুলি অবলম্বন করিতে পারেন:

১. শরীর, মন ও আত্মার শুদ্ধি

সকালে উঠিয়া সর্বপ্রথম কার্য হইল শুদ্ধিকরণ। হনুমানজির পূজা করিবার পূর্বে এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই শুদ্ধিকরণ কেবল শরীরের নহে, মন এবং আত্মার শুদ্ধিও আবশ্যক। মনে কোনো প্রকার খারাপ উদ্দেশ্য রাখা চলিবে না এবং সকল প্রকার মন্দ চিন্তা হইতে দূরে থাকিবার জন্য সংকল্প গ্রহণ করিতে হইবে।

২. গৃহে দীপ প্রজ্জ্বলন ও ভোগ নিবেদন

কাঠের আসনে শ্রী হনুমানজির বিগ্রহ স্থাপন করিয়া তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালানো উচিত। তাহার পর তাঁহাকে প্রসাদ রূপে লাড্ডু অথবা অন্য কোনো প্রস্তুত করা ভোগ নিবেদন করিতে পারেন।

৩. সন্ধ্যাকালে মন্দির দর্শন

সন্ধ্যায় হনুমান মন্দিরে গিয়া ভগবানের আশীর্বাদ গ্রহণ করা খুব শুভ বলিয়া মনে করা হয়। মন্দির দর্শনের সময় বুন্দি বা পেড়া প্রসাদ লইয়া গিয়া হনুমানজিকে নিবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

৪. হনুমান চালিসা পাঠ

শ্রী হনুমানজির সুরক্ষা প্রার্থনা করিবার জন্য হনুমান চালিসা পাঠ এক শক্তিশালী উপায়। সম্ভব হইলে মন্দিরে বসিয়া এই পাঠ করা শ্রেয়। মন্দিরে বসিয়া পাঠ করিতে না পারিলে গৃহে ফিরিয়া অন্তত সাতবার হনুমান চালিসা পাঠ করা উচিত।

৫. রাম নাম জপ

যাঁহারা হনুমান চালিসার সঠিক উচ্চারণ করিতে সমস্যা বোধ করেন, তাঁহারা কেবল “শ্রী রাম” মন্ত্রটি অবিরাম জপ করিতে পারেন। হনুমানজিকে সন্তুষ্ট করিবার জন্য শ্রী রাম নাম জপ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সহজ উপায় বলিয়া বিবেচিত হয়।

৬. সুন্দরকাণ্ড পাঠ

সুন্দরকাণ্ড পাঠ করাও শ্রী হনুমানজির আশীর্বাদ লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। যিনি এই পবিত্র গ্রন্থ পাঠ করেন, তিনি তাঁহার সকল বাসনা পূর্ণ করেন।

৭. চোলা অর্পণ

যাঁহারা হনুমানজির পূজা করেন, তাঁহারা চোলা (জুঁই তেলের সহিত কমলা রঙের সিঁদুর ও বস্ত্র) নিবেদন সম্পর্কে অবগত। চোলা কেবল পুরুষ ভক্তদের দ্বারাই অর্পণ করা উচিত, কারণ হনুমানজিকে ব্রহ্মচারী বলিয়া মানা হয়।

৮. ব্রহ্মচর্য পালন

যাঁহারা হনুমানজির নিকট হইতে সুরক্ষা ও শক্তি লাভ করিতে চান এবং ভক্তিভরে তাঁহার আরাধনা করেন, তাঁহাদের সারাদিন ব্রহ্মচর্য পালন করা উচিত। ইহাতে সুরক্ষার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়।

৯. বানরকে ভোজন

প্রতি মঙ্গলবার বানরকে খাদ্য প্রদান করাও হনুমানজির আশীর্বাদ লাভের আরেকটি উপায়।

১০. হনুমান মন্ত্র জপ

সুরক্ষা ও শক্তি লাভের জন্য ভক্তগণ বিভিন্ন হনুমান মন্ত্র জপ করিতে পারেন।

Brahma ; সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সীমিত উপাসনা: এক বিস্ময়কর রহস্য !

সতর্কতা ও গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ:

  • মঙ্গলবার আমিষ আহার করা হইতে বিরত থাকুন।

  • মদ পান করা হইতে দূরে থাকুন।

  • ব্রহ্মচর্য পালন করা আবশ্যক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর