ব্যুরো নিউজ ১৩ জুন: জলপাইগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ ফার্মেসিতে প্রায় ১৮০.৩ লক্ষ টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগে নতুন করে উত্তপ্ত রাজ্যের প্রশাসনিক পরিসর। এই মামলায় রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়— তদন্তে অগ্রগতি না হলে সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে।
তদন্তে গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
মামলার মূল অভিযুক্ত জলপাইগুড়ির সরকারি ফার্মেসি কলেজ। অভিযোগ, ১৯৮৯ সালে সর্বশেষ অডিট হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠানে। এরপর দীর্ঘদিন কোনও অডিট না হওয়ায় ২০১৭ সালের একটি CAG রিপোর্টে ১৮০ লক্ষ টাকার আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে বারবার অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চের (Anti Corruption Branch) কাছে আবেদন জানানো হলেও কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ না হওয়ায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ওই কলেজের পার্ট টাইম লেকচারার সীমান্ত ভট্টাচার্য।
প্রকাশ্যে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে বিধবাকে মারধর ভয়ঙ্কর পরিণতি ঘাটালে
হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। ডিভিশন বেঞ্চ সরাসরি মন্তব্য করে, “অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চকে দায়িত্ব দিলেও তারা নিষ্ক্রিয় থেকেছে। তদন্ত নিরপেক্ষ না হলে, আদালত CBI-এর হাতে তদন্তভার তুলে দিতে বাধ্য হবে।”
বিচারপতিরা আরও নির্দেশ দেন, রাজ্য সরকারকে আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে তদন্তের গতি ও নিরপেক্ষতা বিচার করে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।লন্ডনে অপমানিত ‘অবৈধ সরকারের প্রধান’ ইউনূস
এই নির্দেশের পর রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে— যেখানে সরকারি অর্থের এত বড় অঙ্কের অনিয়ম রয়েছে, সেখানে এত বছর ধরে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হল না কেন? কেন বারবার অ্যান্টি কোরাপশন ইউনিট নীরব থাকল? বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়, তবে এই মামলায় আরও বড় চক্রের সন্ধান মিলতে পারে।
জনগণের অর্থ নিয়ে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ যে আদালতের চোখে ধরা পড়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আর্থিক তছরুপের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের এই কঠোর অবস্থান শুধু আইন নয়, জনস্বার্থ রক্ষার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকে।
