ব্যুরো নিউজ, ১১ সেপ্টেম্বর:সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারাদেশে দ্রুত বিচারের জন্য বহু ফাস্ট ট্র্যাক আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুত সম্পন্ন করা। তবে পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৯ সাল থেকে গত বছরের শেষ পর্যন্ত মাত্র অর্ধেক পসকো (পৃথক শিশু নিরাপত্তা আইনে) মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। “ইন্ডিয়া চাইল্ড প্রটেকশন” নামক একটি সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে মোট ৪,১৬,৬৩৮টি ধর্ষণ ও পকসো মামলার মধ্যে ২,১৪,৪৬৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, যা মোট মামলার প্রায় ৫২ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে যে, এখনও দুই লাখেরও বেশি মামলা ঝুলে রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিচার ব্যবস্থা দ্রুত করার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত বহন করে। এবং বিচার প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করার জন্য আরও বেশি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই সমস্ত জমে থাকা মামলাগুলি এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে গেলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫৫৪ করে মামলার রায় দিতে হবে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে তিনটি করে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে।তবেই এক বছরের মধ্যে এই সব মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে।
অস্ট্রেলিয়ান মানসিকতার সঙ্গে মিল আছে বিরাটের,বললেন স্মিথ
ভারতে কতগুলো পকসো আদালত ও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট আছে?
প্রসঙ্গত, ভারতে বর্তমানে ৪১০ টি পকসো আদালত ও ৭৫৫ টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট রয়েছে। যার মধ্যে চালু রয়েছে ১০২৩ টি কোর্ট।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে মামলার নিষ্পত্তির যে গতি তাতে প্রতি বছর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে ৭৬,৩১৯ টি মামলার নিষ্পত্তির হারে কোনও নতুন মামলা যুক্ত না হলে জমে থাকা মামলাগুলির রায় দিতে সময় লেগে যাবে আরও তিন বছর। এই অবস্থায় দেশে আরও বেশি সংখ্যায় ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠনের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির জন্য বাকি ২৬৮ টি ফাস্ট ট্র্যাক গঠনের পাশাপাশি ১০০০টি নতুন আদালত তৈরি করতে হবে। এছাড়াও ধর্ষণের মামলার বিচার চার্জশিট দাখিলের দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং পকসো মামলায় এক বছরের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে।প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রতি বছর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতগুলিতে মামলার সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে যে, আদালতগুলির ওপর মামলার চাপ বাড়ছে এবং দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি হয়ে উঠেছে।
এই প্রথমবার পুজোয় কোনও ছবি নেই এসভিএফের, কী জানালেন পরিচালক রাজ তার ‘সন্তান’ ছবির প্রসঙ্গে
বিশেষ করে ধর্ষণ ও পকসো মামলাগুলির নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দ্রুততা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।অপরদিকে, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এসব আদালতে ধর্ষণ এবং পকসো মামলার ক্ষেত্রে কতটা বেকসুর খালাস কিংবা দোষী সাব্যস্ত করার তথ্য পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করা হচ্ছে, তার কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন উঠেছে। এই কারণে, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা এবং জনসাধারণের বিশ্বাস অর্জনের জন্য মামলার নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা উচিত।প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, সমস্ত ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের কার্যক্রম এবং ফলাফল ড্যাশবোর্ডে নিয়মিতভাবে আপডেট করা উচিত। এতে করে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় থাকবে এবং জনসাধারণের কাছে আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে সঠিক তথ্য পৌঁছাবে। বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা হলে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হবে এবং আদালতের প্রতি জনগণের আস্থা আরও দৃঢ় হবে।এছাড়া, ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে, মামলার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা এবং নিয়মিত পর্যালোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে উন্নতি সাধন করা সম্ভব হবে, যা সামগ্রিকভাবে ন্যায়ের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।