ব্যুরো নিউজ ১৪ মে: কলকাতা শহরের অন্যতম চাঞ্চল্যকর আর্থিক লুটের ঘটনায় এবার কলকাতা পুলিশেরই এক কনস্টেবল ধরা পড়লেন। মঙ্গলবার রাতে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ গ্রেফতার করেছে মিন্টু সরকার নামে ওই পুলিশ কর্মীকে। তিনি কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশি যুক্ততার বিষয়টি সামনে আসায় বাড়ছে উত্তেজনা।
বানতলা ম্যানহোলে দুর্ঘটনাঃ তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিতর্ক
কী ঘটেছিল ৫ মে?
৫ মে দুপুরে এন্টালির এস এন ব্যানার্জি রোডের একটি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থার দফতর থেকে দুই কর্মচারী ২ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা একটি ব্যাগে ভরে ট্যাক্সিতে ওঠেন। উদ্দেশ্য ছিল টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া। কিন্তু রাস্তায় বিপত্তি ঘটে। ট্যাক্সিটি ফিলিপ্স মোড় পার হতেই দু’জন অজানা ব্যক্তি সেটিতে উঠে পড়ে। পরে কামারডাঙার একটি ফাঁকা গলিতে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ভর্তি ব্যাগ লুট করে চম্পট দেয় তারা।
ঘটনার পরে সংস্থার কর্মীরা এন্টালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ একে একে ছ’জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে একজন, ঋজু হাজরা, ওই সংস্থারই কর্মী ছিলেন। ফলে স্পষ্ট হয়, পরিকল্পনাটি ভিতর থেকেই হয়েছিল। ধৃতদের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত ৭১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে নামার পর উঠে আসে মিন্টু সরকারের নাম। দক্ষিণ দিনাজপুরের জয়পুর থানার বাসিন্দা মিন্টুকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। যদিও তদন্তকারীরা এখনও নিশ্চিত নন, ওই কনস্টেবল শুধু খবর দেওয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলেন, না কি তিনি সক্রিয়ভাবে এই চক্রে যুক্ত ছিলেন। বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন।
অন্যদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ধরতে এবং বাকি টাকা উদ্ধারে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে এন্টালি, সুভাষগ্রাম, মথুরাপুর-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালানো হয়েছে। প্রতিটি ধাপে উঠে আসছে লুটের নতুন তথ্য। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ বিভাগের ভিতর থেকেই প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা এবং পেশাগত সততার বিষয়ে। তদন্তের রিপোর্ট সামনে আসলে বোঝা যাবে, ঠিক কতটা গভীর ষড়যন্ত্রের ছক কষা হয়েছিল এই বড় মাপের আর্থিক লুটের ঘটনায়।