ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও অখণ্ডতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে, নির্বাচন কমিশন (ECI) বহু দশক পুরনো ভোটার পরিচয়পত্র নম্বর পুনরাবৃত্তির সমস্যাটি সমাধান করেছে, পোল প্যানেলের শীর্ষ সুত্রের মতে ।
সমাধানটি এমন এক পরিস্থিতিতে এসেছে যখন তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সহ বিরোধী দলগুলি নির্বাচন কমিশনকে “কভার-আপ” করার অভিযোগ এনে বিভিন্ন রাজ্যে আলাদা ভোটারদের একই ইলেকটোরাল ফটো আইডেন্টিটি কার্ড (EPIC) নম্বর দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
ইসি সূত্রের খবর, এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত নূন্য—দেশজুড়ে প্রতি চারটি ভোটকেন্দ্রে গড়ে একটি করে কেস ছিল মাত্র। ব্যাপক মাঠ পর্যায়ের যাচাইয়ে দেখা গেছে, একই বা মিলিত EPIC নম্বর থাকা ভোটাররা প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন বিধানসভা অঞ্চলে ও বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নিবন্ধিত বৈধ ভোটার ছিলেন।
““যাদের ভোটার কার্ড নম্বর একই ছিল, তাদের প্রত্যেককে নতুন, স্বতন্ত্র নম্বরসহ EPIC প্রদান করা হয়েছে।,” একজন উচ্চপদস্থ ইসি কর্মকর্তার কথায়।
এই সমস্যা ১৯৯০-এর দশক ও ২০০০-এর দশকের শুরুতে ডিজিটাইজেশনের প্রারম্ভিক সময়ে EPIC চালু হওয়ার পর থেকে চলছিল। ম্যানুয়াল ডেটা এন্ট্রি এবং অপ্রচলিত প্রযুক্তির কারণে, বিশেষ করে জনঘন এলাকা ও প্রবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে কখনো কখনো নম্বরের মিল বা ওভারল্যাপ ঘটতো। যদিও এর ফলে দ্বিগুণ ভোট পড়েনি—কারণ ভোটাররা শুধুমাত্র নিবন্ধিত ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পারেন—তবু এই পুনরাবৃত্তিগুলো ডেটার সততা এবং নির্বাচনী বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
মার্চে রাজনৈতিক চাপ বৃদ্ধির পর, ইসি তিন মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই লক্ষ্যে কমিশন দেশের বিশাল ভোটার ডাটাবেসের একটি বিস্তৃত নিরীক্ষা চালায়, যেখানে ৯৯ কোটি ১২ লক্ষ ভোটার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের চিফ ইলেক্টোরাল অফিসার এবং ৪১২৩টি বিধানসভা অঞ্চলের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার ও ১০.৫ লক্ষ ভোটকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট যাচাই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
ইসি পুনর্বার জোর দিয়েছেন যে, এই ত্রুটি নির্বাচন ফলাফল প্রভাবিত করার পর্যায়ে বিস্তৃত ছিল না, তবে জনগণের বিশ্বাস অটুট রাখতে সকল ভুল সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে। কমিশন এখন এমন একটি প্রক্রিয়া চালু করেছে যাতে প্রতিটি ভোটারকে একটি অনন্য জাতীয় EPIC নম্বর প্রদান করা হবে, যা ভবিষ্যতে প্রতিটি নতুন ভোটারকেও অনুসরণ করতে হবে।