delhi firecrackers ban lifted

ব্যুরো নিউজ ১৬ অক্টোবর ২০২৫ : বুধবার সুপ্রিম কোর্ট দীপাবলি উৎসবের জন্য দিল্লি-এনসিআর (Delhi-NCR) অঞ্চলে বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে, তবে তা কেবল একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে ১৮ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রযোজ্য থাকবে। এই অনুমতির ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করা হয়েছে—বাজি পোড়ানো যাবে কেবল সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যায় রাত ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এই নির্দেশ ঘোষণা করে বলেন, “আমাদের একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, পরিবেশের সঙ্গে আপস না করে সংযমের সঙ্গে এটির (বাজি পোড়ানো) অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” এর আগে, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪-এর একটি আদেশের উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি, যখন দিল্লি সরকার বাজি নিষিদ্ধ করেছিল এবং সেই নিষেধাজ্ঞা পুরো এনসিআর জুড়ে বাড়ানো হয়েছিল।

 

আদালতের নির্দেশ ও নজরদারি

পরিবেশ সুরক্ষার সঙ্গে আপস না করে সীমিত পরিমাণে গ্রিন ফায়ারক্র্যাকার্স ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আদালত পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে যে, শুধুমাত্র QR কোড যুক্ত অনুমোদিত বাজি বিক্রি হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে টহল দল গঠন করতে হবে।

আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে:

  • দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের বাইরে থেকে কোনও বাজি এই এলাকায় ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
  • জাল বা অননুমোদিত বাজি বিক্রি করলে বিক্রেতাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
  • শীর্ষ আদালত সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (CPCB) এবং এনসিআর-এর রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডগুলিকে ১৮ অক্টোবর থেকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা আদালতের এই পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং দিল্লি সরকারের আবেদন বিবেচনা করার জন্য শীর্ষ আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Mamata vs Suvendu : পশ্চিমবঙ্গে ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য কে ধিক্কার জানালেন বিরোধী দলনেতা !

গ্রিন ক্র্যাকার্স কী ও কেন এটি ব্যবহার হচ্ছে?

গ্রিন ক্র্যাকার্স হলো ঐতিহ্যবাহী বাজিগুলির একটি পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প, যা বায়ু এবং শব্দ দূষণ কমানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। ভারতের সিএসআইআর-এনইইআরআই (CSIR-NEERI) দ্বারা উদ্ভাবিত এই বাজিগুলি উৎসবের সময় পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

  • উপাদান: ঐতিহ্যবাহী বাজির মতো গ্রিন ক্র্যাকার্সে বেরিয়াম নাইট্রেট, আর্সেনিক বা সিসার মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে না। এতে পটাসিয়াম-ভিত্তিক যৌগ, হ্রাসকৃত অ্যালুমিনিয়াম এবং কম নির্গমনকারী অন্যান্য নিরাপদ উপাদান ব্যবহার করা হয়। SWAS এবং SAFAL-এর মতো কিছু ধরনে জলীয় বাষ্প নির্গত হয় বা ধুলো কমাতে সাহায্য করে।
  • দূষণের উপর প্রভাব: এগুলি প্রচলিত বাজির তুলনায় ৩০-৫০ শতাংশ কম নির্গমন ঘটায়। এগুলি পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM2.5, PM10), সালফার ডাই অক্সাইড (SO₂) এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড (NOx)-এর মাত্রা কম নির্গত করে এবং শব্দও কম হয়—সাধারণত ১২৫ ডিবি-এর নিচে। তবে, এগুলি সম্পূর্ণরূপে দূষণমুক্ত নয়।

 

বাজির বিশুদ্ধতা যাচাই (Ensuring Authenticity)

গ্রিন ক্র্যাকার্সের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে:

  • ক্রেতাদের নিশ্চিত করতে হবে যে বাজিগুলি NEERI-সার্টিফায়েড এবং পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজেশন (PESO) দ্বারা অনুমোদিত।
  • লাইসেন্সপ্রাপ্ত খুচরা বিক্রেতা বা অনুমোদিত প্ল্যাটফর্ম থেকে বাজি কিনতে হবে।

Durgapur Gangrape : অপরাধের ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন দুর্গাপুরের গণধর্ষণ কাণ্ডের শিকার ডাক্তারি ছাত্রী: নীরব কেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন শুভেন্দুর।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জনমত

দিল্লিতে দীপাবলির রাতে বাজি পোড়ানো বন্ধ করার পদক্ষেপটি পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের আমলে নেওয়া হয়েছিল। যদিও জনগণের মধ্যে এমন মত ছিল যে এই পদক্ষেপটি একটি হিন্দু উৎসবকে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়েছে। এই জনবিক্ষোভের ফলেই দীপাবলিতে বাজি পোড়ানোর পাশাপাশি কেজরিওয়ালের সরকারকেও জনগণ বিসর্জন দেয়। বিজেপি সরকার গঠনের পর এই বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে এবং দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা পরিবেশ রক্ষা ও বাজি পোড়ানো—উভয় দিকেরই পক্ষে অবস্থান নেন। আদালতের এই রায় সেই ভারসাম্যেরই ফল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর