ব্যুরো নিউজ ১১ জুন: রথযাত্রার আগমুহূর্তে দিঘায় ধর্মপ্রাণ মানুষের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠল পবিত্র স্নানযাত্রা অনুষ্ঠান। দিঘা স্নানযাত্রা ২০২৫ ঘিরে এবছর সাধারণ মানুষ ও ভক্তদের মধ্যে এক অন্যরকম উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যাচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় পাহাণ্ডি বিজয় উৎসব—যার মাধ্যমে গর্ভগৃহ থেকে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি বের করে আনা হয় স্নানবেদীর দিকে। প্রতিটি মুহূর্ত জুড়ে ধ্বনিত হয় “জয় জগন্নাথ” ধ্বনি, ঢাক-ঢোলের বাদকরা পুরো পরিবেশকে করে তোলে এক অপার ভক্তিময় মেজাজে।
স্নানযাত্রায় আধ্যাত্মিক আবেশ
আচার অনুযায়ী বেলা ১১টা নাগাদ শুরু হয় দেবত্রয়ের স্নান। শতাধিক কলসীতে আনা পবিত্র জল দিয়ে একে একে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে স্নান করানো হয়। উপস্থিত ভক্তরা মাথা নিচু করে স্নানের সময় প্রার্থনায় মগ্ন ছিলেন। এই স্নানযাত্রা কেবল ধর্মীয় আচার নয়, এটি একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা, যা দেখার জন্য প্রতিবছর দিঘা ও আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন।
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ বিতর্কে শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক অভিযোগ !
এই স্নান পর্বের পর দেবতাদের বিশেষ পোশাকে সাজানো হয়। এরপর তাঁরা বিশ্রামে যাবেন (যা ‘অনাসার’ নামে পরিচিত), এবং রথযাত্রার দিন পর্যন্ত ভক্তদের চোখের আড়ালে থাকবেন। একে বলা হয় ‘নবযৌবন’ অর্থাৎ নতুনভাবে দেবতাদের প্রকাশ। এই পর্ব জুড়েই থাকে নানা ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও প্রসাদ বিতরণ।
এবছর দিঘার রথযাত্রা ঘিরে আরও কিছু বিশেষ আয়োজন থাকছে। স্থানীয় প্রশাসন ও মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রথযাত্রা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য খাওয়া-দাওয়া, থাকা ও ভক্তদের ভিড় সামলাতে অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক দল মোতায়েন করা হয়েছে।
দিঘা স্নানযাত্রা ২০২৫ শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, সাংস্কৃতিক পরিসরেও এক গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। স্থানীয় মানুষের কাছে এটি শুধুই একটা অনুষ্ঠান নয়, বরং আবেগ আর আত্মার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা উৎসব।