ব্যুরো নিউজ, ৮ ফেব্রুয়ারি: আজ বিধানসভায় পেশ হলো রাজ্য বাজেট। বাজেট পেশ করলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। দুয়ারে কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছিলেন এবার রাজ্য বাজেটে চমক থাকতে পারে। শাসকদল আগেই রাজ্যের বহু টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ২১ শে ফেব্রুয়ারি বঞ্চিতদের হাতে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা তুলে দেবেন। আর সেই টাকা সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
রাজ্য বাজেট সাধারণ ও মধ্যবিত্তদের জন্য কতোটা লাভবান হলো?
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি ২১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৭৮ জন মানুষকে দিতে খরচ হবে ৫৯০৭ কোটি টাকা। শুধুমাত্র অদক্ষ মজুরদের দিতে খরচ হবে ৩৫০০ কোটি টাকার মতো। অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এদিন বাজেট পেশের মুখেই লক্ষীর ভান্ডার নিয়ে বড় ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে অর্থমন্ত্রীকে। তিনি জানান, লক্ষীর ভান্ডারে অতিরিক্ত ১২০০০ কোটি বরাদ্দ হল রাজ্যের তরফে। তিনি জানিয়েছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকার পরিমাণ ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা আর তফশিলি জাতি-উপজাতিদের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হলো ১২০০ টাকা। এছাড়াও তিনি আরও জানান, মৎস্যজীবীদের জন্য নতুন প্রকল্প ‘সমুদ্র সাথী’, ও মনরেগার প্রান্তিক মজুরদের জন্য আনা হবে ‘কর্মশ্রী প্রকল্প’, যা বছরে ৫০ দিনের কাজ নিশ্চিত করবে। ভোটের মুখে তিনি আজ আরও ৪ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন। সেই ডিএ মে মাস থেকে কার্যকরী হবে বলে তিনি জানান।
সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নেই কেন? রইলো বিস্তারিত তথ্য
তিনি জানান, সিভিক ভলেন্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ, ও গ্রিন পুলিশের মাসিক বেতন ১০০০ টাকা বৃদ্ধি করা হবে। রাজ্য পুলিশের কোটা ১০ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হবে। তিনি জানান, মিড ডে মিলের কুক ও হেল্পাররা মাসে ১০০০ টাকার পরিবর্তে ১৫০০ টাকা পাবেন। এছাড়াও আরও অনেক ঘোষণা করেন তিনি। আবাস যোজনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই যোজনার বকেয়ার জন্য আরও ১ মাস অপেক্ষা করা হবে। কেন্দ্র সেই ১ মাসের মধ্যে টাকা না দিলে রাজ্য সরকারের টাকা থেকে এই পরিবারদের আর্থিক সাহায্যের কথা বিবেচনা করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। শুধু এই নয়। গঙ্গাসাগর সেতু রাজ্য নিজের সরকারি তহবিলের টাকায় তৈরি করবে। বিধানসভায় বাজেট সম্বন্ধিত বক্তৃতা চলাকালীন বিজেপি সরকারের তরফে স্লোগান দিতে দেখা যায়, যাতে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উষ্মাপ্রকাশ করেছেন। এরপর সাময়িক থেমে অর্থমন্ত্রী আবার তার বাজেট পেশ শুরু করেন। তিনি এরপর জানান, যুবক-যুবতীদের ৫ লক্ষ কর্মসংস্থান করা হবে, ৬টি ইকোনমিক করিডর গড়ে তোলা হবে।
অলিম্পিক এশিয়ান গেমস কমনওয়েলথ গেমস ও সকল জাতীয় আন্তর্জাতিক গেমস এন্ড স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে যারা মেডেল পেয়েছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, যে তাঁরা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী পুলিশ প্রতিষ্ঠানে ও অন্যান্য সরকারি দফতরের চাকরি করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া আগে দ্বাদশ শ্রেণীতে ট্যাব কেনার জন্য টাকা দেওয়া হতো। এখন একাদশ শ্রেণীতেই স্মার্ট ফোন ও ট্যাব কেনার জন্য ১০,০০০ টাকা দেওয়া হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পরিযায়ী শ্রমিক পোর্টালে যারা নথিভুক্ত আছেন, তাদেরকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনা হল। ফলে তারাও এখন কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এখন দেখার পেশ হওয়া এই বাজেট রাজ্যের সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঠোঁটের কোনায় হাঁসি ফোটাতে পারে কিনা। ইভিএম নিউজ