ব্যুরো নিউজ ০৪ নভেম্বর ২০২৫ : কলকাতার বড়তলা এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো ৪ বছরের এক শিশুকন্যার। পুরসভা সূত্রে খবর, শিশুটির রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ (NS-1) পজিটিভ এসেছিল, যা নিশ্চিত করছে যে ডেঙ্গুতেই তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত শিশুকন্যাটির নাম অদ্রীশা পোদ্দার, সে কলকাতা পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এই এলাকাটি ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পরিষদ সদস্য (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের নিজের ওয়ার্ড হওয়ায় ঘটনাটি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ অক্টোবর থেকে শিশুটির জ্বর ছিল। জ্বর কমার পর ফের বাড়াবাড়ি শুরু হলে তাকে প্রথমে বেলেঘাটার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তার প্লেটলেট ছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার। কিন্তু সন্ধ্যা থেকেই অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ইস্টার্ন বাইপাসের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বুধবার দুপুরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
Kolkata : ‘প্রবাসী রাজস্থানি মিট’ কলকাতায়: বিনিয়োগের আহ্বান নিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা
শহরজুড়ে বাড়ছিল প্রকোপ
রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো কলকাতাতেও মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। পুর স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা জানান, এতদিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা মূলত দক্ষিণ কলকাতাতেই বাড়ছিল। কিন্তু এখন উত্তর কলকাতার কাশীপুর, হাতিবাগান, বড়তলা এলাকাতেও আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। নিম্নচাপের জেরে কদিন ধরে চলা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় জল জমেছে, যার ফলস্বরূপ ডেঙ্গুর মশার বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে।
পুর স্বাস্থ্য কর্তারা নাগরিকদের বাড়ির আশেপাশে জমা জল, জঞ্জাল না রাখা এবং মশারি টাঙিয়ে ঘুমনোর বিষয়ে সচেতন থাকার কথা বলেছেন।
পুরসভার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ বিরোধী দলের
এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সরাসরি কলকাতা পুরসভাকে দায়ী করেছে। বিরোধী দল অভিযোগ তুলেছে যে, জমা জল, নিকাশি ব্যবস্থা, পানা পুকুর, আগাছার ঝোপ এবং রাস্তায় আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে পুরসভার চরম উদাসীনতা রয়েছে।
বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলার কর্মী এবং সাধারণ সম্পাদক সুদীপ কুমার রাম এদিন কলকাতা কর্পোরেশনের বরো-২ কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। একটি সমাজ মাধ্যমে তিনি লেখেন, “মানিকতলা বিধানসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েকজন শিশুর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হওয়ায় হাতিবাগান কেএমসি বরো-২ অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। কর্পোরেশনের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে, যার আমরা নিন্দা করি। এছাড়াও, নিজেদের ওয়ার্ডে এই মৃত্যুর জন্য দায়ী ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষেরও আমরা নিন্দা জানাই।”
বিক্ষোভকারীরা ‘TMC Hay Hay’ এবং ‘Atin Ghosh Murdabad’ স্লোগানও দেন। নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রতি বছরই আশ্বিন মাসের ঠিক পরেই পুরসভার উদাসীনতার কারণে কলকাতায় ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগ বাড়তে শুরু করে, তাই এই প্রতিবাদ যথাযথ।



















