শর্মিলা চন্দ্র, ২৯ মার্চ: জেলের ভেতরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার তথা রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারির। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলের মধ্যেই তাঁর হঠাৎ বুকে ব্যথা হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকদের সন্দেহ হয় তিনি সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরই তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা গ্যাংস্টারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।
মুখতার আনসারির মৃত্যুতে শোরগোল যোগীরাজ্যে
হাসাপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২৫ নাগাদ আনসারিকে অচৈতন্য অবস্থায় আনসারিকে বান্দার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি নাকি বার বার বমি করছিলেন। হাসপাতালে ৯ সদস্যের চিকিৎসক দল তাঁর চিকিৎসা শুর করেন। তারা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আনসারির। উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ পেটে ব্যথা হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল আনসারিকে।
মাথায় হাত কংগ্রেসের! কংগ্রেসকে ১৭০০ কোটি টাকার নোটিস দিল আয়কর বিভাগ
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই মুখতার আনসারি সন্দেহপ্রকাশ করেছিলেন যে, জেলের মধ্যেই তাঁকে নাকি ‘স্লো-পয়জন’ করে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এরপরেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় যোগীরাজ্য উত্তাল হয়ে ওঠে। রাতেই জরুরি বৈঠক করেন উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
অপরাধ জগতের পাশাপাশি রাজনীতির জগতেও তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অপরাধ জগত থেকেই তার রাজনীতির জগতে আসা। উত্তরপ্রদেশের মৌ সদর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৫ বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন আনসারি। পরবর্তীতে একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলবন্দি থাকার কারণে বর্তমানে মৌ সদর বিধনসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তাঁর ছেলে আব্বাস আনিসারি।
দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের বাইরে বিক্ষোভ কর্মসূচী ইন্ডিয়া জোটের
উল্লেখ্য, মুখতার আনসারির বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা ছিল। সালটা ১৯৭৮। আনসারির বিরুদ্ধে প্রথমবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। এরপর ১৯৮৬ তে প্রথম তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম খুনের মামলা দায়ের হয়। কিন্তু পুলিশ তখন তাঁর টিকি ছুঁতে পারেনি। ২০০৬ গ্রেফতার হয় গ্যাংস্টার আনসারি। এরপর ২০২২-এ কোন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলবন্দি হন। এখানেই শেষ নয়, কিছুদিন আগে ৩৬ বছরের পুরনো এক অপহরণ মামলায় আনসারিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। একের একের পর অপরাধ করে উত্তরপ্রদেশে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন আনসারি।
তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে? যদিও গ্যাংস্টার রাজনীতিবিদকে ‘স্লো-পয়জন’ করেই হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর ভাই আফজল আনসারির। এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান প্রয়াত গ্যাংস্টারের ভাই আফজল আনসারি। অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনের আগে যোগীরাজ্যে গ্যাংস্টারের এইভাবে মৃত্যু ও তাঁর পরিবারের অভিযোককে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধীরাও এই মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না। মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চান বিরোধীরাও।