ব্যুরো নিউজ,১৮ এপ্রিল: গ্রীষ্মের তীব্র গরমে ঠান্ডা জল পান করার প্রলোভন সবারই থাকে। গরমে এক গ্লাস বরফ-ঠান্ডা জল পান করলে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং তাজা অনুভূতি হয়। কিন্তু জানেন কি, অত্যন্ত ঠান্ডা জল পান করার কিছু অজানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে? বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে, যখন তাপমাত্রা প্রচণ্ড বেড়ে যায়, তখন শীতল জল পান করার সিদ্ধান্তটি আপনার হজম প্রক্রিয়া, শ্বাসপ্রশ্বাস এবং পুরো শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
শান্তির মুখোশে লুকানো উত্তেজনার আগুন: কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
ঠান্ডা জল এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া
গ্রীষ্মের গরমে ঠান্ডা জল পান করা যতটা স্বস্তিদায়ক মনে হয়, তা আপনার শরীরের জন্য কখনো কখনো ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষত গরম আবহাওয়ার পর যদি আপনি বরফ-ঠান্ডা জল পান করেন, তাহলে এটি শরীরের তাপমাত্রার সাথে দ্রুত পরিবর্তন ঘটায়। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিশেষ করে রক্তনালীগুলির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। পুষ্টিবিদ মনপ্রীত কালরা জানান, খুব ঠান্ডা জল পান করলে রক্তনালীগুলি সংকুচিত হয়ে যায় এবং খাওয়ার পর খাবারের চর্বি শক্ত হয়ে যায়, যার ফলে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এছাড়া, ঠান্ডা জলের ফলে পেট ফাঁপা, বদহজমও হতে পারে, বিশেষ করে খাবারের পর যদি আপনি খুব ঠান্ডা জল পান করেন। এছাড়া, হঠাৎ ঠান্ডা লাগার কারণে গলা ব্যথা বা হালকা ঠান্ডা লাগাও হতে পারে। গরমের মধ্যে ঠান্ডা জল পান করলে তাপমাত্রার তীব্র পরিবর্তন আপনার গলার আস্তরণে জ্বালাপোড়া বা সাইনাস কনজেশন (সাইনাসের সমস্যা) তৈরি করতে পারে।
১৪ বছর পর ‘নিরাপদ’ হলেন নিরাপদ মণ্ডলের পরিবার!
বিশেষ করে যাদের ঠান্ডা বা শীতের প্রতি সংবেদনশীলতা বেশি, তাদের জন্য ঠান্ডা জল পান করা একেবারেই ভালো নয়। ঠান্ডা জল পান করার ফলে ভ্যাগাস স্নায়ু উদ্দীপিত হতে পারে, যা হৃদস্পন্দনসহ অনেক অনৈচ্ছিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য দায়ী। এর ফলে কেউ কেউ হৃদস্পন্দন কম অনুভব করতে পারেন, যা বুকে চাপ বা মাথা ঘোরানোর মতো অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। একইভাবে, খুব ঠান্ডা জল দ্রুত পান করলে অনেকেরই মাথাব্যথা হতে পারে, যাকে “মস্তিষ্ক জমে যাওয়া” (brain freeze) বলা হয়। এটি শরীরের তাপমাত্রার তীব্র পরিবর্তন থেকে ঘটে, যার ফলে তালুর স্নায়ুতে চাপ সৃষ্টি হয় এবং মস্তিষ্কে ব্যথার সংকেত পৌঁছায়।
শিক্ষা দুর্নীতি না রাজনৈতিক চিত্রনাট্য? রবিবারের পথে জবাব খুঁজছে রাজনীতি
সুস্থভাবে হাইড্রেটেড থাকার জন্য ঘরের তাপমাত্রায় বা সামান্য ঠান্ডা জলই বেশি কার্যকরী। অত্যন্ত ঠান্ডা জল পান করলে শরীরকে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয় শরীরের তাপমাত্রা ঠিক করতে, ফলে জল দ্রুত শোষিত হয় না। বরং গরমে স্বস্তি পেতে ঠান্ডা বা ঘরের তাপমাত্রায় জল পান করা বেশি উপকারী। এছাড়া, গ্রীষ্মকালে নিয়মিত জল পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে ঠান্ডা বা বরফের জল নয়, হালকা ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল পান করে আপনি দীর্ঘসময় সুস্থ ও হাইড্রেটেড থাকতে পারবেন। তাহলে, পরবর্তী বার গরমের দিনে যখন আপনি ঠান্ডা জল পান করার চিন্তা করবেন, তখন শরীরের সুস্থতা এবং দীর্ঘস্থায়ী হাইড্রেশন নিশ্চিত করতে ঘরের তাপমাত্রায় বা সামান্য ঠান্ডা জল পান করার দিকে মনোযোগ দিন।