ব্যুরো নিউজ,১৩ এপ্রিল: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল রাজনীতি। সেই আবহে রবিবার কলকাতার রাজপথে পথে নামল রাজ্য বিজেপি। কলেজ স্কোয়্যার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত বিশাল মিছিলের আয়োজন করে বিজেপি, যার মূল বার্তা ছিল— ‘চাকরি দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া’। তবে এই কর্মসূচির আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল বিজেপির অভ্যন্তরীণ ঐক্যের প্রকাশ।
Today petrol price: আজ পেট্রল ও ডিজেলের দাম কোন রাজ্যে কত থাকছে এক নজরে জেনে নিন
বিজেপির শীর্ষ নেতাদের ‘একসঙ্গে হাঁটা’র বার্তা
রামনবমীর দিন রাজ্য বিজেপির তিন শীর্ষ নেতা— সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ আলাদা আলাদা কর্মসূচিতে অংশ নিলেও, এক সপ্তাহ পর তাঁরা সকলেই হাঁটলেন একসঙ্গে। এই মিছিলে আরও অংশ নেন রাহুল সিংহ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ রাজ্য বিজেপি এবং যুব মোর্চার বহু পরিচিত মুখ।
৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ায় রাজ্যজুড়ে ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়। বিজেপির অভিযোগ, রাজ্য সরকার যোগ্য-অযোগ্য আলাদা না করায় সকলেই চাকরি হারালেন। এই ইস্যুকেই সামনে রেখে বিজেপি মিছিলে নামে, যদিও মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অশান্তির ঘটনাও মিছিলের বার্তায় জায়গা পায়।
১৪ বছর পর ‘নিরাপদ’ হলেন নিরাপদ মণ্ডলের পরিবার!
মিছিলের শুরু হয় মুরলীধর সেন লেন থেকে। সেখান থেকে তিন শীর্ষ নেতা একসঙ্গে হেঁটে কলেজ স্ট্রিট পৌঁছন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে পথসভায় বক্তৃতা করেন তাঁরা। ভাষণে উঠে আসে দুইটি মূল বার্তা— এক, শুধু শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিই নয়, সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক অশান্তির বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ; দুই, বিজেপি কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক। তাঁরা সরাসরি ‘একতা’র কথা না বললেও, বারবার একে অপরের নাম উল্লেখ করে বুঝিয়ে দেন যে, বিজেপির অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য ভুলে একজোট হওয়ার সময় এসেছে। শোনা যায়, ‘বটোগে তো কটোগে’, ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’— এমন স্লোগান।
শুরু ধোঁয়া থেকে, শেষ কোথায়? রেলের আগুন এখন নিয়মিত আতঙ্ক!
জেলা স্তরেও ঐক্য গড়ার বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছে বিজেপি। মূলত কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে কর্মীদের ডাকা হলেও, প্রত্যেক জেলার জন্য নির্দিষ্ট ‘জোন’ নির্ধারিত ছিল। কে কোথায় হাঁটবেন, তা আগেই ঠিক করে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে জেলা নেতৃত্বের মধ্যে চলতে থাকা বিভেদ ও ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করা হয়। সামগ্রিকভাবে, এই মিছিল শুধু এক প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল না— বরং বিজেপির মধ্যে দলগত ঐক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নির্বাচনের আগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামা বিজেপির জন্য যে তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলাই বাহুল্য।