ব্যুরো নিউজ ১৭ মে: চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে টানা তৃতীয় দিনে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন ২০১৬ সালের এসএসসি প্রক্রিয়ায় চাকরি হারানো শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন শনিবার পৌঁছেছে আরও জেদ ও প্রতিবাদের পর্যায়ে। শিক্ষকদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি বাতিল হলেও তাঁরা ‘দাগি’ নন—তাই সম্মানের সঙ্গে তাঁদের পুনর্বহাল করতে হবে।
বৃহস্পতিবার পুলিশের লাঠিচার্জে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিকাশ ভবন চত্বর। অভিযোগ, পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর বলপ্রয়োগ করে, লাঠিচার্জ করে তাঁদের হটিয়ে দেয়। বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন, কেউ কেউ রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে যান। তবে এতকিছুর পরও আন্দোলন থেকে পিছু হটেননি শিক্ষকরা। শনিবার তাঁরা জানিয়েছেন, বিকেলে বিকাশ ভবনের সামনে থেকে করুণাময়ী পর্যন্ত মিছিল করবেন। এর পাশাপাশি রাস্তায় বসেই ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোরও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
পুলিশকে পেন ও চকোলেট, রাস্তায় পড়ানো শিক্ষার্থীদের — প্রতিবাদের অভিনব রূপ
যাঁরা লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই চিকিৎসার জন্য বাড়ি ফিরলেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বাকিরা। তাঁদের সঙ্গে এবার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও আসছেন। আন্দোলনরত শিক্ষকরা তাদের রাস্তায় বসিয়ে ক্লাস করাবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি শনিবার পুলিশকে ‘চকোলেট ও পেন’ উপহার দেওয়ার কর্মসূচিও নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, যারা তাঁদের মারধর করেছে, তাদের প্রতিক্রিয়ায় তাঁরা শিক্ষা ও শুভবুদ্ধির বার্তা দিতে চান।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিল হওয়ায় ২৫,৭৩৫ জনের চাকরি চলে গেছে। যাঁরা ‘দাগি’ নন, তাঁদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি থাকলেও পরবর্তীতে নতুন নিয়োগে অংশ নিতে হবে। এর বিরোধিতায় এই প্রতিবাদ। অন্যদিকে ‘দাগি’ হিসাবে বিবেচিত যাঁদের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে এবং বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে, তাঁদের একাংশ এসএসসি দফতরের সামনে পৃথকভাবে আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি, কমিশনের চেয়ারম্যান সামনে এসে জানাক, রিভিউ পিটিশনের কী অবস্থা।
অবস্থানে থাকা শিক্ষক বিপ্লব বিবার বলেন, “আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু সরকার ও এসএসসি আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুই জানাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। সপ্তাহান্তে বিকাশ ভবন বন্ধ থাকলেও আন্দোলনের আঁচ থামেনি। বরং তা হয়ে উঠেছে প্রতিক্রিয়ার বদলে বার্তা দেওয়ার মঞ্চ — যেখানে পেন, চকোলেট ও বই দিয়েই শিক্ষকরা জানাচ্ছেন তাঁদের লড়াই এখনও শেষ হয়নি।