ব্যুরো নিউজ ১২ জুন: মানবিকতার মুখে চপেটাঘাত! করোনা আতঙ্কের মধ্যেই চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছিল বেলঘরিয়ার যুবক শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। আর সেই ঘটনা ঘিরেই এবার কলকাতা হাই কোর্ট এক বেসরকারি হাসপাতালকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল। বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় বহাল রাখে, যা আগে সিঙ্গল বেঞ্চ দিয়েছিল।
করোনা আক্রান্ত সন্দেহে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার
ঘটনাটি ২০২০ সালের, যখন কোভিড-১৯ এর প্রভাব তীব্র। গুরুতর অসুস্থ শুভজিৎকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, তাঁর পরিবার দাবি করে—চিকিৎসকরা তাঁকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেন। প্রয়োজনীয় অক্সিজেন না পেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পর শুভজিতের পরিবার রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে। কমিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যায় হাসপাতাল, কিন্তু তাদের সেই আপিল খারিজ হয়ে গেল।বনগাঁ কলেজে বাংলাদেশি সভাপতি? নাগরিকত্ব বিতর্কে তুঙ্গে আলোড়ন!
আদালতের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট বলা হয়েছে—“ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা প্রত্যেক হাসপাতালের মৌলিক দায়িত্ব। শুভজিৎকে সেই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।” অর্থাৎ, এই মৃত্যুর দায় অস্বীকার করতে পারে না সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল।
মৃত শুভজিতের মা জানিয়েছেন, এই রায়ে তাঁরা আংশিক ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি। কিন্তু আদালতের এই সিদ্ধান্ত আমাদের অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছে। সেই ক্ষতিপূরণের টাকা আমি কোনও অসহায় রোগীর জন্য ব্যয় করব।”
বিদ্যাসাগর সেতুতে সমীক্ষা বন্ধ থাকবে যান চলাচল
এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, মহামারির ভয় ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাফিলতি কীভাবে একটি তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। চিকিৎসা ব্যবস্থার এই অমানবিক দিক সামনে আসায়, আরও বেশি করে হাসপাতালের জবাবদিহি ও মানবিকতা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।