ব্যুরো নিউজ ১৪ মে: চণ্ডীগড়ের এক অন্ধবিদ্যালয়ের ছাত্রী কাফি প্রমাণ করে দিল, ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনও প্রতিকূলতাই থামাতে পারে না স্বপ্নপূরণকে। একসময়ে যে কিশোরী অ্যাসিড হামলার শিকার হয়ে চোখের দৃষ্টি হারিয়েছিল, সেই আজ নিজেকে প্রমাণ করেছে এক অনুপ্রেরণার নাম হিসেবে। ১৭ বছর বয়সী কাফি এবার দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ৯৫.৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবার নজর কেড়েছে। চণ্ডীগড়ের সেক্টর ২৬-এর ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্রী সে। নিজের স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে কাফি যেন দেখিয়ে দিল, হার না মানাই বড় জয়ের চাবিকাঠি।
তিন প্রতিবেশীর হিংসার শিকার হয়ে জীবন বদলে যায়
কাফির জীবন বদলে যায় মাত্র তিন বছর বয়সে। ২০১১ সালে হোলির সময় হরিয়ানার হিসার জেলার বুধানা গ্রামে তার উপর চালানো হয় নির্মম অ্যাসিড হামলা। প্রতিবেশীদের হিংসার শিকার হয় এই ছোট্ট মেয়েটি। সেই হামলায় তার মুখ এবং হাত পুড়ে যায়, পাশাপাশি হারিয়ে যায় তার দৃষ্টিশক্তি। তবে এত বড় একটা দুর্ঘটনার পরেও হাল ছাড়েনি কাফি।
ছোট থেকেই নিজেকে গড়ে তুলতে চেয়েছে সে। চোখে দৃষ্টি না থাকলেও, মনে ছিল আলো। কঠোর অধ্যবসায়, অনুশাসন এবং অদম্য মনোবলের জোরে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে গিয়েছে কাফি। এবং তারই ফলাফল, বোর্ড পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্য। ভবিষ্যতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে পড়তে চায় কাফি। আর তার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন—একদিন একজন আইএএস অফিসার হওয়া। দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে তার। নিজের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেললেও, মন এবং চিন্তাশক্তিতে তার দৃষ্টিভঙ্গি অনেক পরিণত।
কাফির এই যাত্রা কেবলমাত্র একটি পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়ার গল্প নয়। এটি লড়াইয়ের, সাহসের, এবং একটি নতুন ভোরের প্রতীক। এই কিশোরী যেন আজকের সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার মূর্ত রূপ। কাফি প্রমাণ করে দিয়েছে—জীবনে যত বড় আঁধারই আসুক না কেন, সংকল্প থাকলে তাতে আলো ফুটিয়েই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।