ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১১ই মার্চঃ স্কুল, কলেজ এমনকি সরকারি দফতর, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অগণতান্ত্রিক উপায় অবলম্বন করে পার্টির নেতারাই ঠিক করে দিতেন কার চাকরি হবে আর কার হবে না। চৌত্রিশ বছরের বাম জমানায় এমন বেনিয়মের ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছে।আর কমিউনিস্ট শাসনকালে হওয়া এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাকে সবথেকে বেশী সোচ্চার হতে দেখা যেত তিনি তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখন এই মমতার শাসনকালে তাঁরই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে উঠেছে নানা দুর্নীতির অভিযোগ।  সম্প্রতি বিনা সুপারিশপত্রে  বেআইনি ভাবে  একটি স্কুলের শিক্ষক পদে নিযুক্ত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে মমতার পরিবারের এক সদস্যের নামে।  শিক্ষায় দুর্নীতির এই  বেনিয়মের নেপথ্যে যার নাম উঠে এসেছে তিনি আর কেউ নন, খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাইঝি বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়।

সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে সুপারিশপত্র ছাড়াই  নবম-দশমের গ্রুপ-সি পদে বেআইনি ভাবে নিযুক্ত হওয়া ৮৪২ জনের নামের তালিকা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে এসএসসি।আর সেই তালিকার ৬০৮ নম্বরে নাম রয়েছে বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়ের।

বৃষ্টির বাবা তথা মুখ্যমন্ত্রীর মামাতো ভাই নিহার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, তার মেয়ে মানসিক রোগী।তবে কীভাবে সরকারি চাকরি পেলেন বৃষ্টি? এই বিষয়ে নিহার বাবুকে জিজ্ঞাসা করলে রীতিমতো হকচকিয়ে যেতে দেখা যায় তাকে।একটি নির্দিষ্ট টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে প্রথমে তিনি বলেন, বৃষ্টি মানসিক রোগী।সারাদিন ওষুধ খাওয়া আর ঘুমনো ছাড়া আর কিছুই করেনা সে।বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।  মেয়ে চাকরি পেয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সে পদত্যাগ করেন।কিন্তু ওই টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারেই তাকে বক্তব্যের পরিবর্তন করে বলতে শোনা যায়, বৃষ্টি পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছিল কিন্তু মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তার সব তথ্য জানা নেই।

এই বিষয়ে বোলপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক আচার্যকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, বৃষ্টি ২০১৯ সালে স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন। যেখান থেকে সুপারিশপত্র পাওয়ার কথা সেখান থেকেই পেয়েছিলেন। তবে মাত্র ১ দিন চাকরি করার পরই সে ইস্তফা দেন। যদিও স্থানীয়দের দাবি, বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়কে বেশ কয়েকবার স্কুলে দেখতে পেয়েছেন তারা।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যের নাম জড়ানোয় স্বভাবতই শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের মতে তদন্ত সঠিক পথে এগোলে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের এমন আরও অনেক সদস্যের নাম উঠে আসবে। আগামী দিনে আর কোন কোন মমতা ঘনিষ্ঠের নাম কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের সন্দেহের তালিকায় উঠে আসে সেই দিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।

 

 

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর