ব্যুরো নিউজ, ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৫ : মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় প্রস্তাবিত ‘বাবরি’ আদলের মসজিদের শিলান্যাস নিয়ে বিতর্কের জেরে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) হওয়ার পর এবার নিজস্ব রাজনৈতিক দল ঘোষণা করলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সোমবার বেলডাঙার মির্জাপুরে এক জনসভা থেকে তিনি তাঁর নতুন দল ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’ (JUP)-র আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু করেন। একইসঙ্গে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে প্রার্থী তালিকায় একাধিক চমক দিয়েছেন তিনি।
একই দিনে দল ঘোষণা ও প্রার্থী চমক
দলের পতাকা উন্মোচন করে হুমায়ুন কবীর জানান, ২০২৬ সালের নির্বাচনে তাঁর দল রাজ্যের ১০০-র বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তাঁর লক্ষ্য তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি— উভয় পক্ষকেই ক্ষমতা থেকে দূরে রাখা। এদিন তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ— সর্বত্রই তাঁর দলের পতাকা উড়বে। তাঁর দাবি, বিধানসভা ভোটের পর সরকার গঠনে তাঁর দলই হবে ‘নির্ণায়ক শক্তি’ বা কিংমেকার।
বৈষ্ণবনগরে সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রার্থী: মনোনয়ন পেতেই চাকরি থেকে অব্যাহতি
হুমায়ুনের ঘোষিত প্রার্থী তালিকার অন্যতম চমক মালদহের বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মুজকেরা বিবি। পেশায় তিনি একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার ছিলেন। তবে রাজনীতির ময়দানে নাম লেখানোর খবর জানাজানি হতেই তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। যদিও এই নিয়ে মুজকেরা বিবির কোনও আক্ষেপ নেই। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, “কাজ করার পরিবেশ ছিল না, যাই হোক ভালোই হয়েছে। আমাদের দলপ্রধান হুমায়ুন কবীর যা নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ী লড়াই করে জেতার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।”
মুজকেরার স্বামী কুরবান আনসারী, যিনি আগে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তিনিও আত্মবিশ্বাসী। তাঁর মতে, ২০২৬-এ তৃণমূল কোনও ফ্যাক্টর হবে না, লড়াই হবে সরাসরি বিজেপির সাথে।
হুমায়ুনের চ্যালেঞ্জ ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
হুমায়ুন কবীর জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে মুর্শিদাবাদের রেজিনগর এবং বেলডাঙা থেকে লড়াই করবেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভবানীপুরে এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে প্রার্থী দেবে তাঁর দল।
এদিকে হুমায়ুনের এই পদক্ষেপকে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মালদহ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশীষ কুণ্ডু তাঁকে ‘উন্মাদ’ বলে কটাক্ষ করে বলেন, “উনি ভোটে দাঁড়ালে নোটার থেকেও কম ভোট পাবেন।” অন্যদিকে, বিজেপি এই নতুন দলকে তৃণমূলেরই একটি ‘বি-টিম’ বলে দাবি করেছে। দক্ষিণ মালদা বিজেপির সহ-সভাপতি তারক ঘোষের মতে, “এই সরকার বিসর্জন দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য, হুমায়ুন কবিরের দল আসলে তৃণমূলেরই একটি অংশ।”


















