ব্যুরো নিউজ ৩০ অক্টোবর ২০২৫ : গত মঙ্গলবার কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে হয়ে গেল এক অভিনব উদ্যোগ— ‘প্রবাসী রাজস্থানি মিট’। মূলত, যাঁরা রাজস্থান থেকে এসে কলকাতায় চাকরি বা ব্যবসা করছেন ( যাদের বেশিরভাগ মাড়োয়ারি বলা হয় রাজস্থানের মাড়ওয়ার অঞ্চলের বাসিন্দা ) , সেই প্রবাসীদের একটি ট্রাস্টি বোর্ডের উদ্যোগে এবং রাজস্থান সরকারের যৌথ সহায়তায় এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ঝাবার সিং খাররা এবং আরপিএসজি গ্রুপের শাশ্বত গোয়েঙ্কা সহ আরও অনেকে। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রবাসী ভাইবোনদের কাছে রাজস্থানের শিক্ষাখাতে, বিশেষত স্কুল নির্মাণ ও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য আরও বেশি করে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
‘রাইসিং রাজস্থান’: সমৃদ্ধির পথে রাজ্য
আলোচনায় উঠে আসে যে, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজস্থান দ্রুত এগিয়ে চলেছে। শিল্পপতিদের বিপুল বিনিয়োগই রাজ্যটিকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলছে বলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী জানান।
ভজন লাল শর্মা বলেন, “আমাদের রাজস্থান এখন দেশের মধ্যে অন্যতম একটি সেরা বিনিয়োগের জায়গা। একাধিক হাইওয়ে তৈরি হয়েছে। গোটা দেশের সঙ্গে আমাদের রাজস্থান আজ যুক্ত। প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা আমরা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগোচ্ছি। রাজ্যের বিকাশ হচ্ছে সর্বত্র। সোলার শিল্পেও আমরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছি। কৃষকদের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে আলো। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত জমি রয়েছে। আপনারা আসুন, বিনিয়োগ করুন। তৈরি হয়েছে হাসপাতাল। আর আমাদের প্রবাসী ভাইবোনদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেইজন্য রাজ্য সরকার সবসময় আপনাদের পাশে আছে।”
শিল্পপতিদের মুখেও রাজস্থান সরকারের ‘ইনভেস্টর ফ্রেন্ডলি’ পরিবেশের প্রশংসা শোনা যায়। তাঁরা বলেন, বিনিয়োগের জন্য সেখানে একাধিক ক্ষেত্র প্রস্তুত রয়েছে। এই কারণেই রাজ্য সরকার ‘রাইসিং রাজস্থান’ নামে বিশেষ প্রকল্পও শুরু করেছে। এই সম্মেলনে জানানো হয় যে, রাজস্থানে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল বিজনেস সামিট’ থেকে ইতিমধ্যেই সরকার ৩৫ লক্ষ কোটি টাকার মউ-চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মধ্যে ৭ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
এসআইআর নিয়ে কড়া বার্তা মন্ত্রীর
আলোচনার ফাঁকে রাজস্থানের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ঝাবার সিং খাররা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বর্তমানে আলোচিত এসআইআর (Special Intensive Revision) প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বিহার সহ দেশের সমস্ত রাজ্যে এসআইআর হবে। অনেকে অনেকরকম কথা বলেছিল, মামলা করেছিল। কিন্তু শেষমেশ মানতে সবাই বাধ্য। আসলে দেশের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন এসআইআর চালু করেছে। আগামীদিনে ভারতের বাকি রাজ্যগুলিতেও হবে।” তিনি আরও কটাক্ষ করে বলেন, যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ভুয়ো ভোটারদের ওপর নির্ভর করে জয়লাভ করে, তাঁদেরই এই এসআইআর নিয়ে চিন্তা থাকা স্বাভাবিক।
এই বিপুল বিনিয়োগের হাত ধরে রাজস্থান সত্যিই ‘রাইসিং’ বা উন্নতি করছে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে কলকাতার মাটিতে বসে প্রবাসী ভাইদের কাছে রাজ্যের এমন ছবি তুলে ধরার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অভিনব।


















