kolkatafloodsdhaktmcvsbjp

ব্যুরো নিউজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : দুর্গা পূজার মুখে কলকাতায় জলমগ্ন হয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করার পর, বিজেপি’র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য পরোক্ষভাবে অভিযোগ করেছেন যে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণে ধর্মীয় কারণ বিবেচনা করা হয়েছে।

 

ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নিয়ে বিতর্ক:

বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় অমিত মালব্য মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন যে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের জন্য ঘোষিত ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ খুবই সামান্য। তিনি ১০ বছর আগে (২০১৫) মক্কা পদদলিত হওয়ার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মৃতদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণার সঙ্গে এর তুলনা করেন।

মালব্য তার পোস্টে লেখেন, “২০১৫: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মক্কায় পদদলিত হওয়ার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মৃতদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছিলেন। ২০২৫: সেই একই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের জন্য মাত্র ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন—যে মৃত্যু তাঁর সরকারের অবহেলার কারণে ঘটেছে। এর থেকে বোঝা যায় যে তিনি বাংলার মানুষের জীবনের কতটা কম মূল্য দেন।”

Mamata Puja : মমতার ‘রেকর্ড’ দুর্গাপুজো উদ্বোধন কর্মসূচি, ‘হিন্দু ধর্মের অপমান’, তোপ শুভেন্দু অধিকারীর

মুখ্যমন্ত্রীর নাচ নিয়ে সমালোচনা:

আরেকটি পোস্টে মালব্য মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার কলকাতায় ১১ জনের মৃত্যুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী বুধবার একটি দুর্গাপূজা মণ্ডপের উদ্বোধনে হাসিমুখে এবং উৎসবে মেতেছিলেন। তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে দক্ষিণ কলকাতার চক্রবেড়িয়ায় একটি মণ্ডপের উদ্বোধনে ‘গরবা’ নাচে যোগ দিতে দেখা যায়।

মালব্য লেখেন, “কলকাতায় ১১ জনের মৃত্যুর ২৪ ঘন্টা পেরোনোর আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুরের চক্রবেড়িয়ায় দুর্গাপূজা উদ্বোধনে আনন্দ ফুর্তি এবং ডান্ডিয়া নাচে মগ্ন ছিলেন। একজন কতটা অসংবেদনশীল হতে পারে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার চূড়ান্ত উদাহরণ।”

 

তৃণমূলের পাল্টা জবাব:

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য অমিত মালব্যের অভিযোগের পাল্টা জবাব দেন। তিনি বলেন, “কলকাতায় ৪ ঘন্টায় ৩০০ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। বিজেপির ‘দু-টাকার ট্রল’ অমিত মালব্য কি এটা জানেন? তিনি কি দিল্লি, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর, পুনে এবং সুরাটের পরিস্থিতি ভুলে গেছেন? তখন কি নরেন্দ্র মোদী দায়বদ্ধ ছিলেন? তিনি আরও বলেন, কলকাতায় ৪০ বছর আগে এমন বৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু তা ২-৩ দিনে হয়েছিল, এবার মাত্র ৪ ঘণ্টায় হয়েছে।”

তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এটি সেপ্টেম্বরে ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ এক দিনের বৃষ্টিপাত ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি এই দুঃখজনক ঘটনাতেও মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করছে এবং সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াচ্ছে।

Kolkata Flooded : বুধবারেও কলকাতা ‘জলবন্দি’: মেয়র-মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক, দায় চাপানোয় ব্যস্ত প্রশাসন

পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন:

যদিও তৃণমূল এই ঘটনাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে তুলে ধরেছে, তবে প্রশ্ন উঠেছে কলকাতার পরিকাঠামো নিয়ে। অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহরে যেখানে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে একটানা বৃষ্টিপাতের পর বন্যা বা ভূমিধসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেখানে কলকাতায় মাত্র ৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে পুরো শহর দুই দিনের জন্য জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, দেশের অন্য কোনও শহরে বা এমনকি পশ্চিমবঙ্গের বন্যাপ্রবণ গ্রাম ঘাটলেও এত বেশি সংখ্যক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি, যা কলকাতার পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর একটি বড় প্রশ্ন চিহ্ন রেখেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর