ind us trade deals trump ted cruze

ব্যুরো নিউজ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (BTA) নিয়ে আলোচনা শুরু হতে চলেছে। এই আলোচনায় যোগ দিতে আজ রাতে ভারতে আসছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ফর সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়া ব্রেন্ডান লিঞ্চ। ভারতের পক্ষে প্রধান আলোচক হিসেবে থাকবেন বাণিজ্য বিভাগের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল। দুই দেশের মধ্যে এই উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল, মঙ্গলবার।

গত কয়েক মাস ধরে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই আলোচনায় প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাত—ভারত তার কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্য খোলার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে, কারণ এই দুটি খাত ভারতের বিশাল সংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস।

 

ট্রাম্পের ৫০% শুল্কের চাপ এবং মোদীর উষ্ণ বার্তা

আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই জটিলতা তৈরি হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক নীতির কারণে। ট্রাম্প প্রথমে বাণিজ্য ঘাটতির কারণ দেখিয়ে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর কিছুদিন পরেই রাশিয়ান তেল আমদানি অব্যাহত রাখার কারণে আরও ২৫% শুল্ক আরোপ করেন, যা মোট শুল্কের পরিমাণ ৫০% এ নিয়ে আসে। এই ৫০% শুল্ক গত ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বরাবরই ‘পারস্পরিক শুল্ক’ (reciprocal tariffs) নীতির পক্ষে কথা বলেছেন, যেখানে তিনি অন্যান্য দেশের আরোপিত শুল্কের সমান শুল্ক আরোপ করে ‘ন্যায্য বাণিজ্য’ নিশ্চিত করতে চান।

তবে এই বাণিজ্যিক চাপ সত্ত্বেও দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক এখনো উষ্ণ। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে “খুবই বিশেষ” বলে বর্ণনা করে বলেন যে, তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবসময় বন্ধু থাকবেন। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে জানান যে, তিনি ট্রাম্পের এই মনোভাবকে “গভীরভাবে প্রশংসা” করেন এবং এই সম্পর্ককে “ব্যাপক এবং বিশ্বজনীন কৌশলগত অংশীদারিত্বের” দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

PM Modi : মার্কিন শুল্ক দ্বিচারিতার মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘স্বদেশী’ বার্তা !

ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে রিপাবলিকান শিবিরে বিভেদ

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি তার নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টি করেছে। যদিও দলের সামগ্রিক সমর্থন এখনো অটুট, কিছু প্রবীণ সিনেটর এই নীতির বিপদ নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সিনেটর টেড ক্রুজ এবং র্যান্ড পলের উদ্বেগ: রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ, যিনি ট্রাম্পের একজন কট্টর সমর্থক, তিনি শুল্ককে ‘গ্রাহকদের ওপর কর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আশা করেন যে এই শুল্ক স্বল্প সময়ের জন্য একটি দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তবে যদি এটি দীর্ঘমেয়াদী হয়, তবে তা মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে পারে, কর্মসংস্থান কমাতে পারে এবং এমনকি একটি মন্দাও নিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন, শুল্ককে যদি দর কষাকষির জন্য ব্যবহার করা হয়, তবে তা ভালো, আর যদি চিরকালের জন্য রাখা হয়, তবে তা ‘খুবই খারাপ’ হবে। তিনি এলন মাস্ককে একজন ‘দেবদূত’ (angel) হিসেবে উল্লেখ করেন, যিনি নিম্ন শুল্কের পক্ষে কথা বলেন।

আরেক রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পলও একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “শুল্ক হলো কর এবং আমেরিকানরা এর মূল্য দিচ্ছে।” তিনি কংগ্রেসকে সংবিধান অনুযায়ী শুল্ক ও বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে নিতে বলেন।

বিল ও ট্রাম্পের পাল্টা জবাব: আরেকজন রিপাবলিকান সিনেটর চাক গ্র্যাসলি শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি বিল পেশ করেছেন। তবে এই বিলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, কারণ এটি হাউসের স্পিকার মাইক জনসনের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে।

USA : ইউক্রেন যুদ্ধ ‘মূলত মোদীর যুদ্ধ’, দাবি হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তার ! বাণিজ্যিক চুক্তি বাতিল জাপানের ।

এদিকে, হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন যেকোনো বিলে ভেটো দেবেন যা শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করবে। বিবৃতিতে বলা হয়, এই ধরনের বিল প্রেসিডেন্টের বৈদেশিক নীতি নির্ধারণ এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষমতাকে বিপজ্জনকভাবে বাধাগ্রস্ত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর