ব্যুরো নিউজ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুটি বাঘিনীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। গত মঙ্গলবার পায়েল নামের বাঘিনীর মৃত্যুর পরদিন বুধবার আরও এক বাঘিনী রূপার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে সূত্র জানাচ্ছে, এই দুটি মৃত্যুই বার্ধক্যজনিত কারণে ঘটেছে।
জোড়া বাঘিনীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে সেন্ট্রাল জু অথরিটি (Central Zoo Authority) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে বাঘিনী দুটির দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং ভিসেরা পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মৃত বাঘিনী রূপার বয়স হয়েছিল প্রায় ২১ বছর। সে আলিপুরেই সাদা বাঘ অনির্বাণ ও হলুদ-কালো ডোরাকাটা বাঘিনী কৃষ্ণর ঘরে জন্ম নিয়েছিল। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় রূপার একটি পা প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে, পায়েল নামের ১৭ বছর বয়সী বাঘিনীকে ২০১৬ সালে ওড়িশার নন্দনকানন থেকে আনা হয়েছিল। সে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল এবং খাওয়া-দাওয়াও প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। প্রায় তিন মাস আগে তার ইউএসজিও করা হয়েছিল।
তবে, স্বাভাবিক মৃত্যু প্রমাণিত হলেও এই ঘটনাকে জনমত রহস্যজনক বলে মনে করছে। কারণ, মাত্র দুই মাস আগেই আলিপুর চিড়িয়াখানায় অস্বাভাবিকভাবে পশু সংখ্যা কমে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল, যার সঙ্গে রাজ্য সরকারের চিড়িয়াখানার একাংশ জমি বিক্রির অভিযোগও জড়িত।
Alipore Zoo : ৩২ বছর ধরে প্রাণী সংখ্যার গরমিল: কলকাতা থেকে নিশ্চিহ্ন হবে চিড়িয়াখানা ?
সুন্দরবনে বাঘের আতঙ্ক ও নদীবাঁধে ধস
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫: একই সময়ে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের লাহিরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্লাসখালীতে বাঘের আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসীদের। গ্রামের মানুষজন প্রথমে নদীর পাড়ে বাঘের একাধিক পায়ের ছাপ দেখতে পায়। খবর পেয়ে বন দফতর ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং বাঘের পায়ের ছাপ নিশ্চিত করেন। এরপর গ্রামের দিকে নদীর চরের অভয়ারণ্য জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, গোসাবা ব্লকের পাখিরালা এলাকায় পূর্ণিমার ভরা কোটালে গভীর রাতে নদী বাঁধে ধস নামে। গ্রামবাসীরা সেচ দফতরে খবর দিলে দ্রুত কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। প্রায় ১০০ ফুটেরও বেশি নদী বাঁধে ধস নেমেছে। বর্তমানে সেচ দফতরের কর্মীরা গ্রামবাসীদের সহায়তায় বস্তা, বাঁশ ও খাঁচা দিয়ে বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন।
এই ভাঙনের ফলে সুন্দরবনের এক ফসলি চাষের জমি, পুকুরের মাছ ও ফসল ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তারা কংক্রিটের নদী বাঁধ চান, যা তাদের এই সমস্যা থেকে স্থায়ী মুক্তি দেবে। এখন দেখার বিষয়, কবে তাদের এই দাবি পূরণ হয়।