protests against macron rock france

ব্যুরো নিউজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকর্নুকে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর স্থলে দায়িত্ব নিলেন তিনি। লেকর্নুকে অবিলম্বে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বাজেট নিয়ে সমঝোতায় আসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন ও বাজেট সংকট

সোমবার সংসদে আস্থা ভোটে ব্যর্থ হয়ে ফ্রাঁসোয়া বাইরু পদত্যাগ করেন। তিনি এক বছরেরও কম সময় আগে কনজারভেটিভ নেতা মিশেল বার্নিয়ারের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। একাধিক বাজেট নিয়ে বিতর্কের কারণে তার পূর্ববর্তী কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীকেও পদত্যাগ করতে হয়েছিল। ম্যাক্রোঁ দ্রুত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কারণ বুধবার ‘ব্লক এভরিথিং’ নামক একটি বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এই বিক্ষোভ মোকাবিলার জন্য সরকার ৮০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছিল।

France : ফ্রান্সে রাজনৈতিক সংকট: প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু’র সরকারের পতন, ম্যাক্রোঁর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

সেবাস্টিয়ান লেকর্নু: পরিচয় ও রাজনৈতিক জীবন

৩৯ বছর বয়সী সেবাস্টিয়ান লেকর্নু ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ২০২৩ সাল পর্যন্ত সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির একটি বড় পরিকল্পনার প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন, যা মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রভাবিত হয়েছিল। ম্যাক্রোঁর একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে লেকর্নু মাত্র এক বছরে ফ্রান্সের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেন।

২০১৭ সালে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর থেকে লেকর্নু স্থানীয় প্রশাসন, বিদেশী অঞ্চল এবং ‘ইয়েলো ভেস্ট’ বিক্ষোভের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১৯ সালে তিনি গুয়াদেলুপে চলমান অস্থিরতার মধ্যে স্বায়ত্তশাসন নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। তার এই নিয়োগ আনুগত্যের প্রতি ম্যাক্রোঁর বিশ্বাস এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তাকে প্রতিফলিত করে। লেকর্নু ২০২২-২০৩০ সালের জন্য ৪১৩ বিলিয়ন ইউরো (৪৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রতিরক্ষা ব্যয় প্যাকেজের স্থপতি ছিলেন।

Nepal : নেপালে গণবিক্ষোভ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম প্রস্তাব

বিক্ষোভ ও পুলিশের পদক্ষেপ

প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের দিনে ফ্রান্সে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে, আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের টিয়ার গ্যাসের মুখে পড়ে। নতুন প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিক্ষোভের অগ্নিপরীক্ষা’র মুখে ফেলে ম্যাক্রোঁর ওপর চাপ বাড়াতে চেয়েছিল বিক্ষোভকারীরা।  ‘ব্লক এভরিথিং’ নামে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। এই বিক্ষোভ ঠেকাতে সরকার জরুরিভিত্তিতে ৮০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছিল।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেটাইলো জানান, দেশজুড়ে বিক্ষোভে প্রায় ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন যে, বিক্ষোভকারীরা “বিদ্রোহের পরিবেশ” তৈরি করার চেষ্টা করছে। দেশের বিভিন্ন শহরে, বিশেষ করে রেনেতে, একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং একটি বিদ্যুৎ লাইনে ক্ষতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বিক্ষোভকারীরা তাদের ‘ব্লক এভরিথিং’ উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল করতে পারেনি, তবু তাদের এই আন্দোলন দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটিয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে এবং দ্রুত গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর