India US Trade deal resumes

ব্যুরো নিউজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা পুনরায় শুরু হচ্ছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের সম্পর্কে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল, এই আলোচনার মাধ্যমে তা শিথিল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

ট্রাম্প ও মোদীর উষ্ণ বার্তা

ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশাল’ পোস্টে ঘোষণা করেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দুই দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য বাধাগুলো মোকাবিলায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।” তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে “খুব ভালো বন্ধু” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে তিনি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তার সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী। ট্রাম্প আরও বলেন যে তিনি নিশ্চিত যে দুই দেশের জন্য একটি “সফল উপসংহারে” পৌঁছাতে কোনো অসুবিধা হবে না। এর প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদীও এক্সে (পূর্বে টুইটার) লেখেন, “ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্বাভাবিক অংশীদার।” তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে এই বাণিজ্য আলোচনা দুই দেশের অংশীদারিত্বের সীমাহীন সম্ভাবনাকে উন্মোচন করবে।

Israel : ভারত ও মোদীর ‘জাতীয় সম্মান’-এর নীতি থেকে ইজরায়েলের শিক্ষা নেওয়া উচিত : ইজরায়েলি সংবাদপত্র জেরুজালেম পোস্ট

শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপট

এই ইতিবাচক আলোচনার আগে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এর মধ্যে ছিল ২৫ শতাংশ সাধারণ শুল্ক এবং ইউক্রেন সংকটের মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক। এই শুল্কের ফলে ভারতের বস্ত্র, রত্ন ও গহনা, চামড়া, সামুদ্রিক খাবার এবং অন্যান্য শ্রম-নির্ভর শিল্প খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যদিও ফার্মাসিউটিক্যালস এবং শক্তি পণ্যের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাত এই শুল্কের আওতার বাইরে ছিল।

 

ভারতের প্রতিক্রিয়া ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

এই শুল্ক আরোপের পর ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান যে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকদের সহায়তার জন্য একটি ব্যাপক প্যাকেজ নিয়ে কাজ করছে। বিভিন্ন শিল্প খাতের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যদিও দুই দেশের নেতারা সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইঙ্গিত দিচ্ছেন, কিছু প্রশ্ন এখনও অমীমাংসিত রয়েছে। ভারত যে নীতির ভিত্তিতে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তাতে এই শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এটি কি ট্রাম্পের আলোচনার টেবিলে একটি সুবিধাজনক অবস্থান নেওয়ার কৌশল, যেখানে তিনি শুল্ক পুরোপুরি না তুলে নিয়ে শুধু কিছুটা কমাতে পারেন? অথবা, যদি মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এই শুল্ককে অবৈধ ঘোষণা করে, তাহলে কি মার্কিন সরকার শুল্কের অর্থ ফেরত না দিয়ে ভবিষ্যতে বাণিজ্যে ছাড় দিয়ে তা পুষিয়ে দেবে? এই বিষয়গুলো এখনো প্রশ্নের মুখে রয়েছে এবং ভবিষ্যৎ আলোচনার ওপর নির্ভর করছে।

Israel : ইজরায়েলের হামলায় ক্ষুব্ধ কাতার, আমেরিকা জানলেও ঠেকাতে পারেনি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

কূটনীতি ও বাণিজ্য

এই সম্পর্কের উষ্ণতা ফেরানোর ইঙ্গিত হিসাবে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিনয় কোয়াত্রা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালিসন হুকারের সঙ্গে একটি “ফলপ্রসূ আলোচনা” করেছেন। কোয়াত্রা জানান যে উভয় পক্ষই তাদের চলমান দ্বিপাক্ষিক এবং ‘কোয়াড’ উদ্যোগের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে। এই বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যেকার শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্ককেও পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর