ব্যুরো নিউজ ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : দক্ষিণ ২৪ পরগণার মগরাহাটে ইলিশ ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাছ ব্যবসায়ীরা মগরাহাট থানার এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি তোলাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উপ-পরিদর্শক সৈকত রায় একটি ইলিশ বোঝাই ট্রাক আটক করেন এবং তোলা আদায়ের চেষ্টা করেন। ব্যবসায়ীরা টাকা দিতে অস্বীকার করায়, তিনি ইলিশের সেই চালানটি নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্র বাজার মাছের আড়তে বিক্রি করতে যান। সেখানেই ব্যবসায়ীরা তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, ছোট আকারের ইলিশ কেনার অজুহাতে পুলিশ আধিকারিকটি তাঁদের ট্রাকটি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রেখেছিলেন। যখন তিনি বুঝতে পারেন যে ব্যবসায়ীরা তাঁকে টাকা দেবেন না, তখন তিনি নিজেই মাছ বিক্রি করতে চলে যান।
শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ
শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পুলিশ এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “ডায়মন্ড হারবার মডেল – তোলাবাজ পুলিশের ইলিশ চুরি !!! মমতা পুলিশের তোলাবাজি দিনকে দিন দুর্নীতির নতুন শৃঙ্গ উত্তরণ করছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, সম্প্রতি ডায়মন্ড হারবারে পুলিশ ইলিশ বোঝাই ট্রাক প্রতি ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা করে তোলা আদায় করছিল এবং টাকা না দিলে ট্রাক আটক করে রাখার হুমকি দিচ্ছিল। শুভেন্দু অধিকারী তাঁর পোস্টে দাবি করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতায় এ রাজ্যের পুলিশ এখন ‘তোলাবাজ পুলিশ’ এর শিরোপা পেয়েছে।” তিনি আরও বলেন, পুলিশ এখন আসামী বা দুষ্কৃতীদের ধরার পরিবর্তে তোলাবাজির কাজে বেশি ব্যস্ত। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আটক করা ট্রাক থেকে দুই পেটি ইলিশ মাছ পুলিশ ইতিমধ্যেই চুরি করে সরিয়ে ফেলেছে।
এই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বা রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। শুভেন্দু অধিকারীর এই আক্রমণ রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে তিনি এই সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, না হলে বাংলার মানুষের “আরও খারাপ কিছু” দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন।