ব্যুরো নিউজ ২৬শে আগস্ট ২০২৫ : ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS), জেনারেল অনিল চৌহান, মঙ্গলবার পাকিস্তানকে এক প্রচ্ছন্ন সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন যে, ২২শে এপ্রিলের পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ এখনও চলছে। মধ্যপ্রদেশের মহো-তে আর্মি ওয়ার কলেজে আয়োজিত “রণ সংবাদ-২০২৫” কনক্লেভে তিনি এই মন্তব্য করেন।
‘শান্তি চাইলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও’
জেনারেল চৌহান বলেন, “অপারেশন সিঁদুর ছিল একটি আদর্শ সংঘাত, যেখান থেকে আমরা অনেকগুলো শিক্ষা পেয়েছি। সেগুলোর বেশিরভাগই এখন বাস্তবায়নের পথে, কিছু বাস্তবায়িতও হয়েছে। অপারেশনটি এখনও চলছে।”
তিনি আরও বলেন যে ভারত একটি শান্তিকামী দেশ হলেও, শত্রুদের এই নিয়ে কোনো ভুল ধারণা থাকা উচিত নয় যে ভারত শান্তিবাদী (pacifist) হবে। তিনি একটি ল্যাটিন প্রবাদ উল্লেখ করে বলেন, যার অর্থ হলো ‘যদি শান্তি চাও, তাহলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও’। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ক্ষমতা ছাড়া শান্তি একটি কাল্পনিক ধারণা।
Operation Sindoor : ৩০০ কিমি দূরে শত্রু বিমানকে পরাস্ত করা , অপারেশন সিঁদুর’-এর সেই বীর সেনানী
‘শশস্ত্র’, ‘সুরক্ষিত’ এবং ‘আত্মনির্ভর’ ভারতের গুরুত্ব
জেনারেল চৌহান একটি উন্নত ভারত (Viksit Bharat) হিসেবে তিনটি মূল বিষয়ের উপর জোর দেন: ‘শশস্ত্র’ (সু-সজ্জিত), ‘সুরক্ষিত’ (নিরাপদ), এবং ‘আত্মনির্ভর’ (স্বয়ংসম্পূর্ণ)। তিনি বলেন, শুধুমাত্র প্রযুক্তিতে নয়, বরং ধারণা এবং অনুশীলনের ক্ষেত্রেও আমাদের আত্মনির্ভর হতে হবে। এই কারণেই আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরে যুদ্ধের কৌশল ও তাত্ত্বিক দিকগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
ভবিষ্যৎ যুদ্ধের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দিক
প্রযুক্তির পাশাপাশি জেনারেল চৌহান ভবিষ্যৎ যুদ্ধের চারটি অপরিহার্য প্রবণতা তুলে ধরেন:
১. রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোর মধ্যে বল প্রয়োগের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা।
২. যুদ্ধ এবং শান্তির মধ্যে পার্থক্যের অভাব।
৩. মানুষের গুরুত্ব।
৪. বিজয়ের মাপকাঠি এবং বিজয়কে আমরা কীভাবে দেখি।
তিনি বলেন, অতীতে বিজয়ের মাপকাঠি সম্ভবত মানুষ ও সামরিক সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা নির্ধারিত হতো। যেমন ১৯৭১ সালে আমরা ৯৫,০০০ পাকিস্তানি সেনাকে বন্দী করেছিলাম। কিন্তু আজকের যুদ্ধ কৌশলে বিজয়ের নতুন মাপকাঠি হলো অপারেশনের গতি ও তীব্রতা এবং দূরপাল্লার নির্ভুল আঘাতের প্রভাব।