Jolpaiguri

ব্যুরো নিউজ ২ আগস্ট : জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুরের নর্থ বেঙ্গল ফার্ম এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। বর্ষা শুরু হতেই সমস্যাটা আরও প্রকট হয়েছে—রাস্তা পরিণত                                                          হয়েছে কাদা-জলে মাখামাখি চলাচল অযোগ্য পথেঘাটে। বারবার অভিযোগ জানিয়েও সমাধান না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার সকালে পথ অবরোধে বসেন। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরও সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল এই প্রতিবাদে।

ভাতা নয়, রাস্তাই চাই !

অবরোধের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ এবং পরে হাজির হন রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মন। কিন্তু পরিস্থিতি সামলানোর বদলে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য আরও আগুনে ঘি ঢালে। তিনি বলেন, “আপনারা জল ফ্রি, ট্যাক্স ফ্রি, লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন, রাস্তাও হবে, কিন্তু ধৈর্য রাখতে হবে।” এই মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন উপস্থিত মহিলারা। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আমাদের লক্ষ্মীর ভান্ডার চাই না, শুধু রাস্তাটা ঠিক করে দিন।”

এর জবাবে বিডিওর আরও বিতর্কিত উক্তি ছিল, “১০০ জন যদি লক্ষ্মীর ভান্ডার না নেয়, তাহলে সেই টাকাতেই রাস্তা বানানো যাবে।” প্রশাসনিক একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মুখে এই বক্তব্য শুনে স্থানীয়দের ক্ষোভ চরমে ওঠে। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে একজন বিডিও নাগরিক অধিকার ও সরকারি প্রকল্পের মধ্যে এমন অদ্ভুত তুলনা টানতে পারেন?

হাজির নন রাজ্যের প্রধান আইনজীবী, ছাত্র সংসদ মামলায় !

ঘটনায় রাজনৈতিক মাত্রা যোগ করে সরব হয় বিজেপি। দলীয় নেতা নকুল দাবি করেন, “বিডিও প্রশাসনের প্রতিনিধি হয়ে এলেও, কার্যত তৃণমূলের প্রকল্পের প্রচারে এসেছেন। তিনি ভাতা ত্যাগের বদলে রাস্তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন—এটা যুক্তির সীমা ছাড়িয়ে গেছে।” তিনি আরও প্রশ্ন করেন, “বালি ট্রাকে ট্রাকে পাচার হচ্ছে, সেই টাকার হিসেব কে দেবে? রাস্তার টাকা কি শুধু ভাতা বন্ধ করলেই জোগাড় হবে?”

এই ঘটনায় শুধু রাজনৈতিক নয়, প্রশাসনিক দায়িত্বশীলতার প্রশ্নও সামনে এসেছে। একটি মৌলিক নাগরিক দাবি—একটি চলার উপযুক্ত রাস্তার জন্য সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। সেখানে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য প্রশাসনের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে।

জলপাইগুড়ির বহু বাসিন্দার মুখে এখন একটাই দাবি—“আমাদের ভাতা নয়, আমাদের সম্মান ও পরিকাঠামোর অধিকার চাই। রাস্তা আমাদের ন্যায্য চাহিদা, করুণার বিষয় নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর