ব্যুরো নিউজ ২২ জুলাই ২০২৫ : ওয়াশিংটন থেকে এক অদ্ভুত খবর ভেসে আসছে, যা ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আসল চিত্র নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ব্যক্তিগত নৈশভোজে দাবি করেছেন যে, এই বছরের শুরুতে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় নাকি পাঁচটি জেট বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল। কিন্তু মজার বিষয় হল, তিনি এই জেটগুলি কার ছিল, তা খোলাসা করেননি।
এর থেকেও বড় চমক, ট্রাম্প নাকি এই যুদ্ধ থামিয়েছেন “বাণিজ্য” দিয়ে! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, বাণিজ্য! মনে হচ্ছে, এখন থেকে যুদ্ধ থামাতে পারমাণবিক বোমার বদলে বাণিজ্য চুক্তির ভয় দেখালেই চলবে।
কাহিনি সংক্ষেপ: উড়ে যাওয়া জেট এবং ট্রাম্পের ‘বাণিজ্যিক ব্ল্যাকমেইল’
ট্রাম্প তাঁর “যুদ্ধবিরতি”-র কৌশল ব্যাখ্যা করে বলেছেন, তিনি নাকি ভারত ও পাকিস্তানকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তারা যদি একে অপরের উপর হামলা চালিয়ে যায়, তাহলে আমেরিকা তাদের সাথে কোনো বাণিজ্য চুক্তি করবে না। “আমরা অনেক যুদ্ধ থামিয়েছি। আর এগুলো ছিল গুরুতর, ভারত ও পাকিস্তান, যেটা চলছিল। বিমান গুলি করে নামানো হচ্ছিল। আমি মনে করি, আসলে পাঁচটি জেট ভূপাতিত করা হয়েছিল। এরা দুটি গুরুতর পারমাণবিক দেশ, এবং তারা একে অপরের উপর আঘাত হানছিল। আপনি জানেন, এটা যেন এক নতুন ধরনের যুদ্ধ। আপনি সম্প্রতি দেখেছেন আমরা ইরানে কী করেছি, যেখানে আমরা তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা একেবারে গুঁড়িয়ে দিয়েছি… কিন্তু ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছিল, এবং এটা বড় থেকে আরও বড় হচ্ছিল, আর আমরা এটাকে বাণিজ্য দিয়ে সমাধান করেছি,” হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে ট্রাম্প এই কথা বলেন।
তিনি আরও যোগ করেন: “আমরা বললাম, আপনারা বাণিজ্য চুক্তি করতে চান। আমরা বাণিজ্য চুক্তি করছি না যদি আপনারা অস্ত্রশস্ত্র ছোড়াছুড়ি করেন, এবং হয়তো পারমাণবিক অস্ত্রও, উভয়ই খুব শক্তিশালী পারমাণবিক রাষ্ট্র।” যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের বাণিজ্যের পরিমাণ , জানা নেই !
মোদীর ট্রাম্পকে সাফ বার্তা ‘ যুদ্ধ বিরতিতে আপনার কোনও ভূমিকা নেই ‘
ভারতের আত্মরক্ষা: হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হলে কি বাণিজ্য চুক্তি বাতিল?
পাহালগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানের কয়েকটি সন্ত্রাসী ক্যাম্পে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতের কয়েকটি শহরে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, কিন্তু ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে বেশিরভাগ হামলা ব্যর্থ হয়। মজার ব্যাপার হলো, ট্রাম্পের এই দাবির মধ্যে ভারতের আত্মরক্ষার বিষয়টি যেন বেশ হাস্যকরভাবে উধাও হয়ে গেছে। তাহলে কি ভারত যদি তার উপর হওয়া হামলা না ঠেকাতে পারত, তবে ট্রাম্প তাদের সাথে বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে দিতেন? যুদ্ধের এমন অদ্ভুত সমাধান আগে কখনও দেখা যায়নি!
অপারেশন সিঁদুরে ৮ F-16, ৪ JF-17 ভূপাতিত; বিপুল ক্ষতি পাক বিমান বাহিনীর
জেট কার ছিল? প্রশ্ন থেকেই যায়!
সংঘাতের সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল যে, তারা রাফাল সহ ছয়টি ভারতীয় জেট ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারত এই সংখ্যা অস্বীকার করেছে, কিন্তু চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) অনিল চৌহান স্বীকার করেছেন যে জেট ভূপাতিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে ক্যাপ্টেন শিব কুমার দাবি করেন যে, রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে যুদ্ধবিমানগুলি গুলি করে ভূপাতিত হয়েছিল। তাহলে কি ট্রাম্পের এই পাঁচটি জেট ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছিল? নাকি এটি ছিল এক অদৃশ্য শক্তির খেলা? অনুমান করা হচ্ছে যেহেতু মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিমানের ভূপতনের জন্যে উদ্বিগ্ন সেক্ষেত্রে বিমানগুলি পাকিস্তানেরই হবে , কারণ ভারত কোনও মার্কিন যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেনা !!!
বাণিজ্য চুক্তি: ট্রাম্পের নতুন কূটনীতি নাকি স্রেফ ‘ধাপ্পা’?
ভারত ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনার মাঝেই ট্রাম্পের এই “ব্ল্যাকমেইলের” দাবিটি সামনে এল। আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং একটি বাণিজ্য চুক্তি শীঘ্রই স্বাক্ষরিত হতে পারে। তাহলে কি ভারত এই ‘বাণিজ্যিক ব্ল্যাকমেইলের’ শিকার হয়েই যুদ্ধ থামিয়েছিল? নাকি ট্রাম্পের এই বক্তব্য কেবলই তাঁর নিজস্ব ব্র্যান্ডের কূটনীতি প্রদর্শনের একটি হাস্যকর প্রচেষ্টা? এটা স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এখন শুধু শক্তি নয়, বাণিজ্যও এক বড় হাতিয়ার – অন্তত ট্রাম্পের কাছে! তবে, এই ধরনের দাবির ফলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।