ব্যুরো নিউজ ১৪ জুন: বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পরই নতুন মোড় নেয় ইজরায়েল-ইরান সংঘাত। এক নজিরবিহীন অভিযানে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ২০০টি ইজরায়েলি যুদ্ধবিমান ইরানের আকাশে ঢুকে পড়ে।
অপারেশন রাইজিং লায়ন vs. অপারেশন ট্রু প্রমিজ
তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও প্রতিরক্ষা ঘাঁটিগুলো। বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু হয় নাতনাজ ইউরেনিয়াম পরিশোধন কেন্দ্র ও তাবরিজের সেনা ঘাঁটি। এই হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের সেনা প্রধান জেনারেল বাঘেরি ও বিপ্লবী গার্ড প্রধান হোসেন সালামি, পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীও।
এই হামলার প্রত্যুত্তরে ইরান চালু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’। শতাধিক ড্রোন এবং প্রায় ১৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় ইজরায়েলের দিকে। যদিও ইজরায়েল দাবি করেছে, অধিকাংশ হামলাই তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিহত হয়েছে। কিন্তু তেল আভিভে বিস্ফোরণের শব্দ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা জাগিয়েছে।
রামপুরহাটে রান্না বন্ধ! পুষ্টি বঞ্চনায় শিশুরা
এই সংঘাতের রাজনৈতিক মাত্রাও গভীর। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইজরায়েলকে এর “চরম মূল্য” দিতে হবে। এরই মধ্যে ইরানের কোম শহরে ঐতিহ্যবাহী জামকারান মসজিদের চূড়ায় উড়েছে লাল পতাকা—যা ঐতিহাসিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণার প্রতীক।
বিশ্ব জুড়ে এই সংঘাত ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে। ভারতসহ বহু দেশ শান্তি ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। তবে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে ইজরায়েলের অভিযানকে সমর্থন করেছেন। এদিকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা বড় ধরনের পরিবেশগত বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তৃণমূলে রক্তগরম রাজনীতি ফের প্রকাশ্যে!
মোসাদের মাধ্যমে গোপনে ইরানে ড্রোন মজুত এবং ইজরায়েলের ভিতরে থেকে চালানো এই অত্যাধুনিক হামলা ইঙ্গিত দেয়, যুদ্ধ এখন আর কেবল সীমান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই—এটি হয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর ও গভীরভাবে কৌশলগত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ইজরায়েল-ইরান সংঘাত যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা হয়, তাহলে তা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য এমনকি বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক ভয়ঙ্কর বিপদ হয়ে উঠতে পারে।