ইভিএম নিউজ ব্যুরো, মালদহঃ মেয়েটি পড়ে ক্লাস সেভেনে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি আর উর্দুতে রীতিমতো চোস্ত হয়ে উঠেছে। শুধু বলা বা পড়াই নয়, এই বয়সেই সবকটি ভাষায় কবিতাও লিখে ফেলেছে একরত্তি এই মেয়ে। আর সেখানেই শেষ নয়। একটি ইংরেজি উপন্যাসও লিখতে শুরু করে দিয়েছে ক্লাস সেভেনের এই প্রতিভাধর ছাত্রী। মাত্র ১২ বছর বয়সের এই প্রতিভাধার মেয়েটির নাম লামিসা আহমেদ। বাড়ি মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তেঁতুলবাড়ি এলাকায়। পড়ে সেখানকারই কিরণবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যাশ্রমে। এহেন প্রতিভাধর মেয়ের জন্য তার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা গর্ববোধ করবেন না, তাও আবার হয় নাকি?

রোজকার পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা, আবৃত্তি, কবিতা আর উপন্যাস লেখা তো আছেই, সেই সঙ্গে কোরানও কণ্ঠস্থ করে ফেলেছে লামিসা। গড়গড় করে শুনিয়ে দিচ্ছে ইংরেজিতে লেখা এনসাইক্লোপিডিয়া, এমনকী হ্যারি পটারের গল্পও। সুযোগ পেলেই হাতে তুলে নিচ্ছে গোয়েন্দা কাহিনী, কিশোর গল্পসমগ্র থেকে  শুরু করে শরৎচন্দ্রের ‘লালু’, সুকুমার রায়ের ‘হ য ব র ল’ সহ আরও অনেক বই। এককথায় যাকে বলে বইপোকা।  কিন্তু কেন এমন সাহিত্য উপন্যাস আর কবিতার প্রতি আগ্রহ? তাও আবার মাত্র ১২ বছর বয়সেই? লামিসা নিজেই জানিয়েছে সেই কথা।  বলেছেন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী পড়ে সে জানতে পেরেছিল, কবিগুরুও তাঁর কিশোর বয়স থেকেই কবিতা লেখতে শুরু করেছিলেন। আর সেটা জানার পর থেকেই, কবিতা লেখার আগ্রহটা লামিসাকে যেন পেয়ে বসেছিল।

কাঁচাহাতে লেখা প্রথমদিকের সেই কবিতাগুলো তেমন ভালো না হলেও, লামিসার মা কিন্তু তাঁর এই আদরের মেয়েটিকে উৎসাহই দিয়ে গেছেন।  সেই উৎসাহেই এরপর থেকে একের পর এক কবিতা লিখতে শুরু করে, ছোট্ট এই মেয়ে। আর সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই, ইতিমধ্যে বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় প্রায় ২৫ টি কবিতা লিখে ফেলেছে লামিসা। এমনকী, ‘আলিয়া দ্য ম্যাজিক স্টোন’ নামে, একটি ইংরেজি উপন্যাসও লিখতে শুরু করেছে এই মেয়ে। ইতিমধ্যেই লেখা হয়ে গেছে উপন্যাসটির ৪৫ টি পাতা।

এত লেখাপড়া কেন করছে লামিসা? উত্তরটা নিজেই দিয়েছে এই মেয়ে। বলেছে, প্রথমে সে ভেবেছিল, বড়ো হয়ে সে একজন চ্যান্সেলর হবে। কিন্তু পরে লামিসা জানতে পারে, চ্যান্সেলর বা রাষ্ট্রদূত হলে তাঁকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে হবে, তখন সেই ইচ্ছে ত্যাগ করে লামিসা। এখন সে চায়, বড় হয়ে কোনও কলেজের অধ্যক্ষ হবে। অবশ্য লামিসার বাবার বড় ইচ্ছে যে, তাঁদের এই আদুরে মেয়েটি বড় হয়ে বৈজ্ঞানিক হোক।

দুই ভাই বোনের মধ্যে লামিসাই বড়। বাবা খবির আহমেদ মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের এডিএ অফিসে ব্লক টেকনোলজি ম্যানেজার পদে চাকরি করেন। লামিসার মা ফরিদা ইয়াসমিন মিটনা হাইমাদ্রাসার একজন আংশিক সময়ের শিক্ষকা। ফলে জ্ঞান হওয়ার পর থেকে, পরিবারের মধ্যেই লেখাপড়ার পরিবেশ পেয়েছে এই প্রতিভাধর মেয়ে। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সেই প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে, এখন থেকেই রোজ গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে ১২ বছরের বিষ্ময় প্রতিভা লামিসা আহমেদ।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর