ব্যুরো নিউজ ১৪ মে: টিকা বহুকাল ধরে জনস্বাস্থ্যের স্তম্ভ, যা ব্যক্তি ও সমাজকে মারাত্মক সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে আসছে।
টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা ধারণার কারণে টিকা গ্রহণে দ্বিধা ও প্রত্যাখ্যান দেখা যাচ্ছে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা, কারণ টিকাকরণের হার হ্রাস পেলে টিকা-প্রতিরোধযোগ্য রোগ দ্রুত ফিরে আসতে পারে। কেজে সোমাইয়া মেডিকেল কলেজ এবং রিসার্চ সেন্টারের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ দীপালি কদম-এর মতে, এই ভুল ধারণাগুলি বোঝা এবং টিকাদান সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। টিকা তৈরি, পরীক্ষা এবং প্রয়োগ সম্পর্কিত তথ্য জানা থাকলে আমরা সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হব।
১. এমন কোনো দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা আছে যা প্রমাণ করে যে টিকা নিরাপদ?
অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের মতোই টিকাও ব্যাপক নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে যায়। ভারতে, সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন টিকার ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স প্রদানের জন্য দায়ী।
২. টিকা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কিছু লোকের মনে যে ভয় রয়েছে তার পিছনে কি কোনো সত্যতা আছে?
কিছু ব্যক্তি ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে হালকা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন ব্যথা, ফোলাভাব এবং/অথবা লালভাব অনুভব করতে পারে। কিছু ব্যক্তি জ্বর অনুভব করতে পারে। গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিরল। স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সাথে উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করলে ভয় কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩. জনসাধারণ কীভাবে অনলাইনে নির্ভরযোগ্য টিকা তথ্য এবং ভুল তথ্যের মধ্যে পার্থক্য করবে?
জনসাধারণ অনলাইনে নির্ভরযোগ্য টিকা তথ্য এবং ভুল তথ্যের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য সরকারি স্বাস্থ্য ওয়েবসাইট (যেমন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক), স্বনামধন্য স্বাস্থ্য সংস্থা (যেমন, ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স) এবং পিয়ার-পর্যালোচিত বৈজ্ঞানিক নিবন্ধের উপর নির্ভর করতে পারে।
৪. টিকা সংক্রান্ত ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরবর্তী বড় চ্যালেঞ্জ কী?
ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে টিকা সংক্রান্ত ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। ভুল তথ্যের মোকাবিলা এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রচারের জন্য কার্যকর কৌশল তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫. টিকা সম্পর্কে এমন একটি ভুল ধারণা কী যা আপনি চান লোকেরা আজই বিশ্বাস করা বন্ধ করুক?
একটি ভুল ধারণা যা দূর করা অপরিহার্য তা হল টিকা অটিজম এবং বন্ধ্যাত্বের কারণ – এই দাবি। বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই ধারণা সম্পূর্ণরূপে ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, “টিকা গ্রহণের আস্থা বৃদ্ধি এবং মিথ্যা ধারণা খণ্ডন অনেকাংশে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের উপর নির্ভর করে। একসাথে কাজ করলে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলিকে রক্ষা করতে, রোগের প্রাদুর্ভাব বন্ধ করতে এবং টিকাদান প্রচারণার চলমান কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারব। টিকার সাথে সম্পর্কিত ডেটা পরীক্ষা করা এবং তথ্য অনুসন্ধান করা আমাদের মিথ থেকে সত্যকে আলাদা করতে এবং সকলের জন্য একটি নিরাপদ, উন্নত সম্প্রদায় গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। টিকাদানের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে উচিৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অপরিহার্য।”