ব্যুরো নিউজ,২৯ এপ্রিল: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে ফিরল এক ওড়িশার পরিবার। ২২ এপ্রিল বৈসরনে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন সন্দীপ ভোলা ও তার পরিবার। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনেই সব বদলে যায়।
সেই দিনের ভয়ংকর স্মৃতি
সন্দীপ কটকের বাসিন্দা। বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপনের জন্য স্ত্রী লেলিনা, ছেলে, মা শশী কুমারী ও বাবা রঞ্জিতকে নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তারা বৈসরনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, তখনই শুরু হয় গুলি।
সন্দীপ জানান, “আমরা তখন ছবি তুলছিলাম। হঠাৎ গুলির শব্দ পেলাম। প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। কিন্তু লোকজন যখন ছোটাছুটি শুরু করল, তখনই বুঝলাম পরিস্থিতি ভয়ানক।”
এরপর তারা দেখেন, পর্যটকেরা একে একে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন। প্রাণ বাঁচাতে সবাই দৌড়াতে শুরু করেন। চারদিকে ছিল খোলা জায়গা। কোথাও লুকোনোর উপায় ছিল না।স্ত্রী লেলিনা পালাতে গিয়ে পড়ে যান। তার কব্জি ভেঙে যায়। মাও পড়ে গিয়ে আহত হন।
এই সময় সন্দীপ এবং তার বাবা দেখতে পান, কয়েক হাত দূরে একটি ছেঁড়া ত্রিপল পড়ে রয়েছে। সেই ত্রিপলের নীচে তারা লুকিয়ে পড়েন। দীর্ঘ সময় তারা নীরবে অপেক্ষা করেন।জঙ্গিরা চলে যাওয়ার পর উঠে দেখেন, আশপাশে ১৪টি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।
এই ঘটনায় ২৫ জন ভারতীয় এবং এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। হামলার স্মৃতি এখনও তাজা সন্দীপের মনে। তিনি জানান, এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জীবনে আর কখনও হয়নি।সন্দীপ বলেন, “আমরা সত্যিই দ্বিতীয় বার জন্ম নিয়েছি। একটু দেরি হলে হয়তো আজ আমাদের অস্তিত্ব থাকত না।”
কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, তা ভাবতেও পারেননি সন্দীপ ও তার পরিবার। বর্তমানে তারা নিরাপদে কটকে ফিরেছেন, কিন্তু সেই দিনের ভয়ংকর স্মৃতি তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে।