ব্যুরো নিউজ,১৬ এপ্রিল: ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে রাজ্যে যখন উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেই সময়েই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শান্ত ও সংযত থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জিমদের একটি পূর্বনির্ধারিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা শান্ত থাকুন। আমি আছি এখানে। অশান্তি না করে, আপনারা যদি প্রতিবাদ করতে চান, তাহলে তা হোক দিল্লিতে।’’ মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, রাজ্য সরকার নয়, বরং তিনটি ইমাম সংগঠনের আমন্ত্রণেই তিনি সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন। সম্মেলনে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও উপস্থিত ছিলেন।
অশান্তির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি, দিল্লিতে আন্দোলনের ডাক
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সরকারের হিসাব অনুযায়ী রাজ্যে ৪০,৪৮৯ জন ইমাম এবং ২৮,০০০ জন মোয়াজ্জিম রয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘হাতজোড় করে বলছি, কেউ যদি অশান্তি করতে চায়, আপনারা তাঁকে শান্ত করুন। ধর্মের মঞ্চ থেকে শান্তির বার্তা দিন।’’ ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে বাংলায় যে অশান্তি হয়েছে, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই সংশোধনী আইন কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার দ্রুততার সঙ্গে পাশ করিয়েছে, যাতে সাংবিধানিক পদ্ধতি লঙ্ঘন হয়েছে। তাঁর মতে, জমি ও আইনশৃঙ্খলার মতো বিষয় রাজ্যের আওতাধীন, তা সত্ত্বেও কেন্দ্র বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ করছে।
তিনি দাবি করেন, এই সংশোধনী আইন বাংলায় কার্যকর হবে না। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘আপনারা যদি প্রতিবাদ করতে চান, দিল্লি যান। ট্রেনে, প্লেনে যান। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করুন। কিন্তু বাংলায় অশান্তি করবেন না।’’ ভাঙড় ও মুর্শিদাবাদের কিছু এলাকায় অশান্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘‘সরকারি সম্পত্তিতে আগুন লাগানো হয়েছে। কিছু লোক রাজনৈতিক পরিচিতির জন্য এগুলো করছে।’’ তিনি ভুয়ো খবর থেকে সাবধান থাকতে বলেন এবং দাবি করেন, ‘‘বিজেপি ফেক ছবি ছড়াচ্ছে— উত্তরপ্রদেশ, বিহার, কর্নাটকের পুরনো ছবি বাংলার নামে চালানো হচ্ছে।’’
শুরু ধোঁয়া থেকে, শেষ কোথায়? রেলের আগুন এখন নিয়মিত আতঙ্ক!
রামনবমীতে সংখ্যালঘুদের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশংসা করে বলেন, ‘‘আপনারা শান্তি বজায় রেখেছেন। ওদের (বিজেপি) পরিকল্পনা ছিল অশান্তি ছড়ানোর, কিন্তু আপনারা তা ব্যর্থ করে দিয়েছেন।’’ শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংবিধানিক পদ্ধতিতে লড়াই করুন। উত্তেজিত হলে হারবেন, শান্ত থাকলে জিতবেন।’’