দুধসাগর জলপ্রপাত যা ভারতের অন্যতম উঁচু জলপ্রপাত। প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টি। গোয়া এবং কর্ণাটকের সীমান্তে অবস্থিত এই চার স্তরের জলপ্রপাত মাণ্ডবী নদীর ওপর গড়ে উঠেছে। ৩১০ মিটার (১০১৭ ফুট) উচ্চতা এবং ৩০ মিটার (১০০ ফুট) গড় প্রস্থের জন্য এটি পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। বর্ষাকালে দুধসাগর তার পূর্ণ রূপে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে যখন জলপ্রপাতের সাদা ফেনার মতো জলরাশি পাহাড় বেয়ে নেমে আসে।
মন ভালো করার সেরা গন্তব্য , ঘুরে আসুন হিমাচাল প্রদেশের স্পিতি উপত্যকা
অবস্থান এবং বিশেষত্ব
দুধসাগর জলপ্রপাত গোয়ার রাজধানী পানাজি থেকে ৬০ কিমি দূরে এবং বেলগাম থেকে ৮০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত। এটি ভগবান মহাবীর অভয়ারণ্য এবং মোল্লেম জাতীয় উদ্যানের মাঝে পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় অবস্থিত। মাণ্ডবী নদীর পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিন্দু। এই অঞ্চলের পাতাঝরা বন সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য আদর্শ। বর্ষাকালে এই জলপ্রপাত ভয়ংকর সুন্দর হয়ে ওঠে, যদিও শুষ্ক মৌসুমে এর প্রবাহ কিছুটা কমে যায়।
কীভাবে যাবেন?
দুধসাগরে যাওয়ার প্রধান পথ দুটি।
- জীপ সাফারি: বর্তমানে জলপ্রপাতের কাছে যাওয়ার একমাত্র বৈধ উপায় ভগবান মহাবীর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ট্যাক্সি পরিষেবা। কল্লেম থেকে শুরু হওয়া জীপ আপনাকে জলপ্রপাতের নিকটবর্তী অঞ্চলে নিয়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি প্রায় ₹৫০০, এবং একটি জীপে সাতজন পর্যন্ত যেতে পারেন। বন বিভাগের প্রবেশ ফি দিয়ে আপনি প্রায় দেড় ঘণ্টা জলপ্রপাতের কাছে সময় কাটাতে পারবেন।
- ট্রেকিং: ট্রেকিং করতে চাইলে কুল্লেম থেকে ১১ কিমি বা ক্যাসল রক থেকে ১৪ কিমি হাঁটতে হবে। তবে রেলপথ ধরে ট্রেকিং বর্তমানে নিষিদ্ধ এবং নিরাপত্তার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ। রেলপথে হাঁটার সময় বড় অংকের জরিমানা বা শাস্তির সম্মুখীন হতে পারেন।
- শহরের কোলাহল থেকে দূরে গিয়ে এবার অবশ্যই ঘুরে আসুন দার্জিলিং এর ছোট্ট গ্রাম তিনচুলে
জলপ্রপাত দর্শনের সেরা সময়
অক্টোবর থেকে মে মাস পর্যন্ত দুধসাগর ভ্রমণের সেরা সময়। বর্ষাকালে রাস্তাগুলো বন্ধ থাকায় ট্রেনের মাধ্যমেই যাওয়া সহজ। তবে বর্ষার সময় প্রবল বৃষ্টি এবং দ্রুত প্রবাহের জন্য জলপ্রপাতের নিচের পানিতে নামা বিপজ্জনক।
রোমাঞ্চকর জীপ সাফারি
জীপ সাফারি দুধসাগরের প্রধান আকর্ষণগুলির মধ্যে একটি। কাদা রাস্তায় বন্যপ্রাণী দেখার সম্ভাবনা, নদী পার হওয়ার উত্তেজনা, আর ঝর্ণার গর্জন শুনতে শুনতে যাত্রা ভ্রমণকে স্মরণীয় করে তোলে।
বিশেষ নির্দেশিকা
- বর্ষাকালে গাইড এবং জীবন রক্ষার জন্য জ্যাকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক।
- বনাঞ্চলে ঢোকার সময় বন বিভাগের নির্দেশিকা মেনে চলুন।
- পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নিন।