kester-pratyabartan-birbhum-politics

ব্যুরো নিউজ,২৫ সেপ্টেম্বর:‘কেষ্ট’ নামে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল, গত দু’বছর পর মঙ্গলবার সকালে তার নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। তিনি অ্যাকশন ছবি পছন্দ করেন। অ্যাকশন ছবি নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে তিনি মন্তব্য করেছিলেন,‘‘যে বইয়ে (ছবিতে) অ্যাকশন নেই, সেটা আবার বই নাকি!’’ তবে, জেল থেকে ফিরে আসার পর অনুব্রত যে অ্যাকশন শুরু করেছেন, তা দেখে বীরভূমের তৃণমূলের নেতারা হিন্দি সিনেমার সংলাপ ধার করে বলছেন, ‘‘সমঝদারোঁ কে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়!’’ অর্থাৎ, বুদ্ধিমানদের জন্য ইঙ্গিতই যথেষ্ট।

চন্দ্রযান-৩: রোভার আবিষ্কার করল ১৬০ কিমি চওড়া গর্ত

অনেক নেতা ঢুকতে পারেননি

বাড়িতে প্রবেশ করার পর, অনুব্রত বসেছিলেন তার অফিসে, যেখানে তিনি একসময় বীরভূম জেলা পরিচালনা করতেন। তবে, তার সামনে দলের অনেক নেতা ঢুকতে পারেননি। কিছু নেতা ভিতরে প্রবেশ করতে পারলেও, অন্যদের ফিরতে হয়েছে। এটি অনেকের কাছে পরিষ্কার যে, অনুব্রত ফিরেই দলীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছেন।  কেবল কয়েকজন নেতাই অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন, যেমন নলহাটির তৃণমূল বিধায়ক রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, বোলপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ এবং তার স্বামী সুদীপ্ত ঘোষ। কিন্তু যারা ফিরে গেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। চন্দ্রনাথ বলেছেন যে তিনি অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করেছেন, তবে অনেকের দাবি, কেষ্ট তাকে ভিতরে ঢুকতে দেননি।অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে আরও অনেককে। তাদের মধ্যে ছিলেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, ময়ুরেশ্বরের বিধায়ক অভিজিৎ রায় এবং মুরারইয়ের বিধায়ক মোশারফ হোসেন।সবার মনে প্রশ্ন কেন অনুব্রত কিছু নেতাকে প্রবেশ করতে দিলেন এবং বাকিদের দিলেন না?অনেকের মতে, অনুব্রত জেলে যাওয়ার আগেই চন্দ্রনাথ এবং বিকাশের সঙ্গে তার সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল যেটা  মঙ্গলবারের ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে। জেলে থাকার সময় অনুব্রতের সঙ্গে যারা নিয়মিত দেখা করতে গিয়েছিলেন, তারা ফিরে এসে তার পাশে থাকতে পারলেন। জেলা তৃণমূলের নেতারা বলছেন, অনুব্রত এখন তার পুরোনো বন্ধুদের দিকে নজর দিচ্ছেন এবং নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করছেন।

বাংলায় কোথায় কোথায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলো কলকাতা হাওয়া অফিস

অনুব্রত তিহাড়ে থাকাকালীন অনেক কিছু বদলেছে। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কাজল শেখ এখন জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়েছেন। এই বিষয়টি শাসকদলের অনেক নেতার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে।কলকাতার তৃণমূল নেতারাও অনুব্রতের ফিরে আসা নিয়ে খোঁজ রাখছিলেন। একজন নেতার মন্তব্য, ‘‘দিন গড়িয়ে গেল কিন্তু রানাকে কেষ্টদার বাড়ির আশেপাশে দেখা গেল না!’’ লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ কেষ্টর ‘ডানহাত’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে ছিলেন, তবে অনুব্রতের বাড়িতে যাননি।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুরে থাকাকালীন অনুব্রতের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে সেটি বাস্তবে হয়নি। তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ‘‘দিদির সঙ্গে কেষ্টদার দেখা না হওয়া স্বাভাবিক।’’মঙ্গলবার সকালে যখন অনুব্রত কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছান, তখন তিনি হুইলচেয়ারে ছিলেন। তার গাড়ি বোলপুরে পৌঁছালে, সেখানে জনতার ভিড় জমেছিল। সবুজ আবির উড়ছিল, এবং জনতা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘অনুব্রত মণ্ডল জিন্দাবাদ’। এই স্লোগান শুনে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।২৫ মাস ১৩ দিন পরে, বাড়িতে ফিরে আসার পর অনুব্রত বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এখনও ‘গোষ্ঠী-ব্রত’ বজায় রেখেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর