ব্যুরো নিউজ, ২৭ এপ্রিল: প্রবাদ আছে ‘টাকা থাকলে ভূতের বাপেরও শ্রাদ্ধ হয়।’ আচ্ছা ধরুন আপনাকে বলা হল,যদি একটি রাত কোনও ভূতুড়ে বাড়িতে থাকতে পারেন তাহলে তার বিনিময়ে পাবেন লাখ লাখ টাকা। সেই মুহূর্তে আপনি ঠিক কী করবেন? ভূত- ভগবান নিয়ে তর্কের যেমন কোনও নিরন্তর নেই তেমনই অপরদিকে, ভৌতিক কাহিনীকে ঘিরে বেশ কিছু মতবাদ প্রচলন আছে আমাদের দেশে। কেউ ভূতে বিশ্বাস করেন আবার কেউ ঘোর অবিশ্বাসী। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় হদিশ মিলেছে বিভিন্ন প্যারানরমাল মুভমেন্টের। কেউ সেই অ্যাক্টিভিটিস বিশ্বাস করেন আবার কেউ তা মানতে একেবারেই নারাজ।
আজ আপনাদের খোঁজ দেব এক অদ্ভুত ভৌতিক অলৌকিক বাড়ির
তবে আজ আপনাদের খোঁজ দেব এক অদ্ভুত ভৌতিক বাড়ির। যেটি অবস্থিত আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো শহরে। এটির নাম ম্যাককামে ম্যানর। পৃথিবীতে যতগুলি ভূতুড়ে জায়গা আছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভূতুড়ে বাড়ি বলে আখ্যা দেওয়া হয় এই ম্যাককামে মেনরকে। তবে শুনলে অবাক হবেন, বর্তমানে এই বাড়িটিকে ঘিরেই কিন্তু ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে। এবার আপনার প্রশ্ন হতে পারে, কি করে একটি ভয়ের বাড়িকে ঘিরে ব্যবসা চলতে পারে? উত্তরটি হল বাড়িটি বিখ্যাত শুধুমাত্র ‘ভয় দেখানো’কে কেন্দ্র করে।এই বাড়ির মালিকের নাম রাস ম্যাককামে।তিনি ২৩ বছর কাজ করেছেন নৌসেনায়।
এই ভূতুড়ে বাড়িটির গল্প শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। যেখানে এই বাড়ির মালিক নিজের বাড়িতে সমস্ত বাচ্চাদের কেন্দ্র করে একটি হ্যালোউইন পার্টির আয়োজন করেছিলেন। এরপর ওই বাড়ির মালিকের মাথায়, মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এক অদ্ভুত রকমের নেশা।যেখানে তিনি ক্রমে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হ্যালোউইন পার্টি আয়োজন করতে শুরু করেছিলেন।এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন ‘আরও ভয় দেখাতে হবে মানুষকে।’ ফলস্বরূপ নিজের বাড়িতে শুরু করে ফেলেন ভয় দেখানোর কারবার। অথচ, তিনি এর জন্য কোনও টাকা নিতেন না।
কিন্তু তিনি মনে মনে পরিকল্পনা করেছিলেন, ভবিষ্যতে তিনি ওই ভয়ের বাড়ি টাকা নিয়েই চালাবেন।সেই বাড়িতে মোট আট ঘণ্টা ভয় দেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মানুষ অস্থির হয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান এক-দু’ঘণ্টা পরই। ম্যাককামের বাড়িতে নাকি আট ঘণ্টা কেউই কাটাতে পারেননি।যেসব ব্যক্তির ভয় পাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের দাবি, শরীরে ট্যারান্টুলা,ইঁদুর ছেড়ে দেওয়া হত। মাথা কামিয়ে দেওয়া হত। কাউকে আবার মুখ ডুবিয়ে দেওয়া হত জলে মাস্ক পরিয়ে।
তবে এমন অদ্ভুত শখের কারণ সম্পর্কে, এক সংবাদ মাধ্যম এই বাড়ির মালিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন,‘‘আমি মানুষকে ভয়ের সিনেমার মতো অভিজ্ঞতা বাস্তবে দিতে চাই। তবে তা সিনেমার মাধ্যমে সম্ভব নয়। সিনেমা আর বোকা বানাতে পারে না আমাদের।’’উল্লেখ্য,এই ভয়াবহ বাড়িতে সর্বোচ্চ সময় টিকে থাকার লড়াইয়ে রয়েছেন এক তরুণী।যিনি এখানে থেকেছেন ছ’ঘণ্টা পর্যন্ত। তরুণীর নাম সারা পি।
সেই তরুণী ২০১৪ সালে এই রেকর্ড গড়েছেন নিজের নামে। তবে এখানে থাকতে গেলে মানুষের দরকার হয় ফিট সার্টিফিকেটের।যেটি ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। এই ভয়াবহ বাড়িতে ভয় দেখানোর মাধ্যম গুলি হল- কারোর হাত-পা বেঁধে ফ্রিজে বন্ধ করে রাখা, পিছন থেকে কারোর মুখ আটকে ধরা অথবা কারোর ওপর নকল রক্ত ঢেলে দেওয়া। যেগুলি এই ভয়াবহ বাড়িতে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্টগুলিই করে থাকে।তবে আপনাদের জানিয়ে রাখি, এই ভয়াবহ বাড়ির উপরে পড়েছে আদালতের কড়া নজর। আদালত ২০২৩ সালে নির্দেশ দিয়েছেন,’এই ভুতুড়ে বাড়িতে সত্যিই ক্রেতা সুরক্ষা আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তা অবিলম্বে খতিয়ে দেখতে হবে।’ সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে,সেই তদন্ত চলছে এখনও পর্যন্ত।