ব্যুরো নিউজ, ২৩ ফেব্রুয়ারি: প্রাপ্য গ্রেচুয়িটির টাকা না দিয়ে হুগলির একটি জুটমিল মালিকেরা দিব্যি গা ঢাকা দিয়ে বেরাচ্ছিল। আর অবসর প্রাপ্ত ওই জুটমিলে ৭ শ্রমিক হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন তাদের দরজায়। কিন্তু, ভাগ্যে জুতেছিল মালিকদের বিদ্রূপ। শেষমেশ কলকাতা হাই কোর্টের দারস্ত হওয়ার পরেই তারা সুদ সহ প্রায় ২৩ টাকা পেলেন। আর তাতেই দিন মজুর ওই শ্রমিকদের মুখে হাসি ফুটেছিল। জানা গেছে হুগলীর ওই জুটমিলে্র কর্তৃপক্ষের বিরিদ্ধে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তার এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারা হাজিরা দেননি। বিরক্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়য় কলকাতার হেয়ারষ্ট্রীট থানার ওসি কে খবরদেন হাই কোর্টে হাজিরা দেওয়া নিশ্চিত করতে। শেষমেশ মিল কর্তৃপক্ষ সিঙ্গেলব্যাঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান। সেখানেই বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিশ্বজিত চৌধুরী স্পষ্ট নির্দেশ দেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বকেয়া ওই টাকা দিয়ে দিতে হবে।
রাজ্যে চুরি-দুর্নীতিতে নয়া সংযোজন! সামনে এলো নয়া কারচুপির অভিযোগ
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ক্ষুধার্ত গরীব শ্রমিকদের গ্রেচুয়িটির টাকা আটকে রাখা জবরদস্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। শ্রমিকদের মামলার গেড়োয় আটকে রেখে টালবাহানা করে যাচ্ছিলেন জুটমিল কর্তারা। এক সময় তারা বলেছিলেন, গ্রেচুয়িটির মূল টাকা পেলেও সুদ পাওয়া যাবে না। শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিলের মালিকেরা চন্দননগরের আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সাহায্যে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, গ্রেচুয়িটির টাকা দীর্ঘ সময় আটকে রাখার পর নিরুপায় হয়ে বঞ্চিতরা কম টাকা নিয়েই রফা করে নেয়। কোম্পানির জবরদস্তি মানা যায় না। যে টাকা অবসরের এক মাসের মধ্যে দেওয়ার কথা সেই গ্রেচুয়িটির টাকা বছরের পর বছর আটকে রেখে জবরদস্তি করে যাচ্ছে বহু মালিক। শ্রমিকেরা অনেক ক্ষেত্রে এসব টাকা আর পাননা। ওই ৭ শ্রমিক ২৩ লক্ষ টাকা হাতে পেয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ও ডিভিশন বেঞ্চের ২ বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিশ্বজিত চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি। একইসঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন।