ব্যুরো নিউজ, ১৯ অক্টোবর: আলতাফ রাজাকে মনে পরে? এখন কি করছেন তিনি? জানেন?
বিনোদনের দুনিয়ায় তারকা হয়ে ওঠা সত্যিই কপালের ব্যাপার৷ দিনের পর দিন, বছরের পর বছর কাজ করেও বহু প্রতিভাবান ব্যক্তিই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যান৷ নব্বইয়ের দশকের সেই আলতাফ রাজাকে মনে পরে? যাঁর ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি’ একসময় পাড়ার পুজোর মণ্ডপ মাতিয়ে রাখত৷ সেই একটা গান, যা তাঁর নাম ‘গিনিস ওয়ার্ল্ড বুকে’ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল, জানেন কী করেন তিনি এখন? কোথায় থাকেন? কী ভাবে তাঁর দিন কাটে?
১৬ GB র্যাম-সহ Nokia G42 5G ফোন কিনলে ফ্রিতে Bluetooth headphone!
১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয় আলতাফ রাজার প্রথম অ্যালবাম ‘তুম তো ঠহরে পরদেশি’৷ যা রাতারাতি তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল৷ ভেঙে দিয়েছিল পূর্ববর্তী যাবতীয় ব্যক্তিগত গানের রেকর্ড৷ রাতারাতি বিক্রি ৭ মিলিয়ন ক্যাসেট৷ যা তৈরি করেছিলো রেকর্ড। এত খ্যাতি অর্জন করেও সেই আলতাফ রাজা বর্তমানে লাইম লাইটের সম্পূর্ণ বাইরে। আলতাফ ১৯৬৭ সালের ১৫ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেন। আলতাফের বাবা মায়ের ইচ্ছে ছিল, ছেলে যাতে ভাল জায়গায় পড়াশোনা করে, সফল কোনও কেরিয়ার বেছে নেয়৷ ভাল স্কুলে পড়ানোর জন্যেই আলতাফকে নিয়ে আসা হয় মুম্বইয়ে৷ সেখানে প্রথমে তিনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়৷ তারপরে ভর্তি করানো হয় মুম্বইয়ের নামী অ্যান্টোনিও ডি’সুজা স্কুলে।
আলতাফের বাবা মা জানতে পেরেছিলেন, ওই স্কুলে রাজ কপুরের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের যাতায়াত রয়েছে। সেই কারণেই হয়ত স্কুলটি বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা৷ যদিও এত ভাল স্কুলে পড়েও আলতাফের পড়াশোনায় মন ছিল না৷ নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি৷ ছেলের পড়াশোনায় মন নেই দেখে, আলতাফের বাবা মা তাঁকে দর্জির কাজের শিক্ষানবিশিতে ভর্তি করিয়ে দেন৷
কিন্তু, তাঁর রক্তে যে গান ছিল৷ সেটা মিথ্যে হবে কী করে? আলতাফের বাবা মা দু জনেই কাওয়ালি গান গাইতেন৷ বিভিন্ন মঞ্চে গান গেয়েই সংসার চালাতেন৷ আলতাফও এবার জানিয়ে দিলেন, তিনিও গানই গাইতে চান৷ গান গেয়েই বিখ্যাত হতে চান৷ এরপর তিনি হারমোনিয়ামের প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। সারাক্ষণ গান গাইতেন। আলতাফ তাঁর মায়ের সাথে গায়ক হিসেবে মঞ্চে কাওয়ালি সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করেন। আলতাফের মা ও তাঁকে পেশাগতভাবে গান করার পরামর্শ দেন। বাবা-মায়ের সহায়তায় আলতাফ সারাদেশে সংগীত পরিবেশন শুরু করেন।
আলতাফ রাজার কেরিয়ারের সবচেয়ে হিট গান ছিল ‘তুম তো ঠহর পরদেশি’। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, এই গানটির নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও রেকর্ডেও যোগ করা হয়েছে৷ কারণ এখনও পর্যন্ত এই অ্যালবামের রেকর্ড সংখ্যক ক্যাসেট বিক্রি হয়েছে ভারতে। আলতাফ রাজা ১৮ বছর বয়সে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন এবং অনেক সম্মানও পেয়েছেন। কিন্তু এখন আলতাফ ইন্ডাস্ট্রি থেকে সম্পূর্ণ নিখোঁজ এবং গত ২ বছর ধরে তিনি কোনও নতুন গানও প্রকাশ করেননি। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া ইমরান হাশমির ‘ঘনচক্কর’ সিনেমায় আলতাফ রাজার কণ্ঠ শোনা গিয়েছিল। আলতাফের শুরু থেকেই গজল গান গাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল৷ কিন্তু তাঁর মা তাঁকে বলেছিলেন, গজলের আগে সিনেমার গান গাওয়ায় গুরুত্ব দিতে, তাই তিনি বলিউডের ছবিতেই গান গাইতে শুরু করেন। কিন্তু, প্রথমবারের মতো সাফল্য আর আসেনি৷ ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকেন তিনি৷ কমতে থাকে কাজও৷ মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আলতাফ এখনও মুম্বইয়ের মোহাম্মদ আলি রোডের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। ইভিএম নিউজ