বর্ষাকাল

লাবনী চৌধুরী, ১৫ সেপ্টেম্বর: বর্ষাকালে ছ’মাস হাঁটু জল থাকে!  

“আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে

বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।”

এ এক আজব গ্রাম। শুধু বৈশাখ মাসেই নয়, এখানে গোটা বর্ষাকালজুড়ে পুরো গ্রামেই ‘হাঁটু জল’।

জল জমে-বিপত্তি | ডুবল গাড়ি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার ব্লকের লক্ষীকান্তপুর, নলপুকুর ও পোলেরহাট। এই তিনটি গ্রামের অবস্থা ঠিক এরকম। যেখানে বর্ষাকালে ছ’মাস ধরে জলমগ্ন গোটা এলাকা। চর্ম রোগে আক্রান্ত শয়ে-শয়ে গ্রামবাসী। কোথাও বা  সাপ-ব্যাঙ, কোথাও বা বিষাক্ত পোকা-মাকড়ের সঙ্গে মানুষের বাস। তবে সব জেনে শুনেও ‘উদাসীন’ প্রশাসন।

এইভাবে থাকাটা শুধু এক-দু’দিনের জন্য নয়,  এইভাবেই চিরটাকাল ধরে জীবন কাটাচ্ছেন এখানকার মানুষ। ‘রাজা যায় রাজা আসে’, কিন্তু এঁদের জীবনের কোনও পরিবর্তন ঘটে না। এই অবস্থায় সাপ-ব্যাঙ ও বিষাক্ত কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস করতে হচ্ছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে। এমনকি চার-পাঁচজনকে সাপের ছোবলও খেতে হয়েছে।  আতঙ্ককে সঙ্গী করেই জীবন যাপন।

জল পিপাসা পেলে ভরসা নোংরা জলে ডুবে থাকা কলের দুর্গন্ধ যুক্ত জল। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া প্রায় বন্ধ। গৃহবন্দী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। অসুস্থ মানুষেরও নেই চিকিৎসার সুযোগ। প্রতিটা বাড়িতে বাড়িতে জ্বর, মশার উপদ্রব। নোংরা জলের দরুণ গায়ে চর্মরোগ।

উপায় না পেয়ে অনেকেই নিজের বাড়ি ছেড়ে ভাড়া চলে গিয়েছেন অন্যত্র। কারণ রান্নাঘর থেকে শোয়ার ঘর পর্যন্ত সবই জলমগ্ন।এমনকি আইসিডিএস সেন্টার, স্কুলও ভুগছে এই জল যন্ত্রনায়। আর মানুষের এই জল যন্ত্রণা নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধীদের তরজা।

লাগাতার বৃষ্টিতে জলমগ্ন উত্তরবঙ্গ

শাসকদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই এলাকা রেলের অধীনে। তারা কাজ করতে গিয়ে রেল দফতরের দ্বারা হেনেস্তা হয়েছেন। বিজেপির মদতে রেলের আধিকারিকরা তাদের ড্রেজার মেশিন সিজ করে ন’জনকে কেস দিয়েছে। তা সত্তেও তারা খাল কেটেছে, কাল্ভাট তৈরি করেছে। রেল অনুমতি দিলে এক সপ্তাহে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতি, প্রধান সবাই শাসকদলের। আর নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে তারা এলাকার মানুষের কাছে ভুল বার্তা দিতে ক্ষমতাহীন বিজেপিকে দোষারোপ করে চলেছে”। চ্যালেঞ্জের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে , “সৎ সাহস থাকলে বিধায়ক সকলকে নিয়ে রেলের ডিআরএমের কাছে চলুন। তাহলে বোঝা যাবে যে তারা মানুষের জন্য কিছু করতে চায়। কয়েক বছর ধরে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে তাদের এই মিথ্যা নাটক। মানুষ এসব সব বুঝতে পেরেছে। এই মিথ্যা নাটক বেশি দিন চলবে না”।

শাসক-বিরোধীদের তরজা অনেক তো হলো। তবে এই ‘জল যন্ত্রনা’ থেকে অসহায় মানুষগুলো মুক্তি কি পেলো? ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর