ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ৩ জুনঃ (Latest News) কালীঘাটের কাকুর নয়া কীর্তি -শিশুদের খেলার মাঠও বেদখল
অতীতের দিকপাল খেলোয়াড় এবং ফুটবল প্রশিক্ষক শ্রীযুক্ত তপন কুমার ঘোষ। তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে বেহালার ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে রায়নগর মাঠে বাচ্চাদের ফুটবল প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন।
কলকাতার এই খেলার মাঠ থেকে তপন বাবুর প্রশিক্ষণে প্রতি বছরই কিছু ছেলেদের পাঠানো হত সুইডেনের গোথিয়া কাপ খেলার জন্য।
কিন্তু এই সব এখন অতীত, গত দু’বছর থেকে সেই মাঠে ফোর্থ ডিভিশন থেকে ফার্স্ট ডিভিশন, এমনকি বাচ্চা শিশু খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ সব বন্ধ হয়ে যায়।
তপন বাবুর অভিযোগ, গত দু-বছর ধরে তিনি প্রশিক্ষণ দিতে পারছেন না কারণ, দু’বছর আগে বেহালার ফকির পাড়ার কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র তার দলবল ও মাস্তান বাহিনী পাঠিয়ে এবং এলাকার কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে এমনকি থানাকে হাতে নিয়ে এই মাঠ দখল করেছিল।
এসব কথা বলতে বলতে তপন বাবু কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তিনি বলেন, বাচ্চা শিশুরা আজ খেলতে পারছে না। আজ সেই মাঠ জঙ্গল হয়ে পড়ে আছে এবং পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রেখেছে দখলদাররা। তিনি আরও জানান, এই মাঠ নিয়ে থানা পুলিশ সবই হয়েছে। কিন্তু বাহুবলী এই কালীঘাটের কাকু এতই ক্ষমতাশালী যে কোনভাবেই এই মাঠ দখলমুক্ত করা যায় নি। ওনাকে জিজ্ঞেস করতে গেলে ‘আমার উপর কে আছে জানেন’- এই বলে না কি সবাইকে ভয় দেখান। এরপর ঘটনা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। এখনও সেই কেস বিচারাধীন।
১২ কাটার উপরে এই মাঠের আয়তন। এই মাঠে আরো কত কিছু হতো। হরিনাম কীর্তন হতো এক সপ্তাহব্যাপী এবং হ্যান্ডিক্যাপড চাইল্ড ক্রিকেট খেলাও হত। আজ সব অতীত। এলাকায় শিশুদের খেলার জায়গাই নেই। তারা খেলতে চেয়ে কান্নাকাটি করে। অভিভাবকরাও দুঃখ করেন। মাঠ বাঁচানোর জন্য তপনবাবু অনেক লড়াই করেছেন।
আদৌ কি এই মাঠ আবার ফিরে পাওয়া যাবে, আবার শিশুরা কি খেলা ধুলা করতে পারবে- সেই প্রশ্নই এখন ভাবিয়ে তুলছে বেহালার জমিদার রায় পরিবারের শৈলেন্দ্রনাথ রায়ের দুই পুত্র সুবীর রায় এবং গৌতম রায়কে। এই মাঠ এখন জঙ্গল হয়ে রয়েছে। এই মাঠ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে কেস চলছে। আর মাঠ ফিরে পাওয়ার আশায় শিশুরা দিন গুনছে। আর তপন বাবু? রোজ এসে তার প্রাণের চেয়েও প্রিয় রায়নগর মাঠের পাশে এসে দাঁড়ান, দীর্ঘশ্বাস ফেলেন আর শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। কবে এই মাঠ দখল মুক্ত হবে, কবে আবার তিনি শিশুদের নিয়ে ফুটবল পায়ে মাঠে নামতে পারবেন, সেই আশাতেই দিন গুনছেন।
(EVM News)